পাকিস্তানি অভিনেত্রী ও মডেল সাদফ কানওয়াল

নারীবাদ নিয়ে আলোচনায় বসে স্ত্রী হিসেবে নারীর ভূমিকা কেমন হওয়া উচিত তা নিয়ে পাকিস্তানি অভিনেত্রী ও মডেল সাদফ কানওয়ালের একটি মন্তব্য ফেসবুক ও টুইটারে ভাইরাল হয়েছে।  

পাকিস্তানি ব্যবহারকারীদের কাছে টুইটারে এটি এখন ট্রেন্ডিং টপিক হয়ে আছে। 

পাকিস্তানি টেলিভিশন চ্যানেল এআরওয়াইয়ের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থাপিকা সাদফকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন নারীবাদ সম্পর্কে তার ভাবনা কী? পাকিস্তানে কি নারীরা শোষিত?

এর জবাবে সাদফ বলেন, নারীরা মোটেও শোষিত নয়। নারীরা খুবই শক্তিশালী এবং আমি নিজেকে খুব শক্তিশালী মনে করি এবং আপনিও অনেক শক্তিশালীই হবেন। নারী মোটেও দুর্বল নয়। এটা নিয়ে কথা বলতে গেলে সেটা অন্য আলোচনা হয়ে যাবে। আমাদের সংস্কৃতি কী? আমাদের সংস্কৃতি হলো আমাদের স্বামী। আমি বিবাহিত, আমাকে তার জুতায় হাত দিতে হবে... তার কাপড় ইস্ত্রি করতে হবে...যা আমি করি না... মানে আমি কম করি।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু আমি জানি তার কাপড় কোথায়। আমাকে জানতে হয় যে তার কোন জিনিস কোথায় পড়ে আছে। সে কী খাবে তা আমাকে জানতে হয়, কারণ আমি তার স্ত্রী। যেহেতু আমি একজন নারী, তাই এসব বিষয়ে আমার বেশি করে জানা উচিত। আমি এটা দেখেই বড় হয়েছি। আজকাল অনেক উদারপন্থি এসেছে। আমি মনে করি, নারীবাদ হোক আর যাই হোক, নিজের স্বামীর খেয়াল রাখা উচিত ও তাকে সম্মান করা উচিত, আর তার জন্য যা সম্ভব তা করা উচিত। 

সাদফের এসব কথাবার্তা ভাইরাল হয়েছে ফেসবুক টুইটারে। টুইটারে তার কাছে এখন সবাই জানতে চাচ্ছেন তিনি আসলে কী বোঝাতে চেয়েছেন? অনেকে বলছেন যে, ভারতের পুরুষ ও নারী হকি দল যখন টোকিও অলিম্পিকের সেমিফাইনালে পৌঁছেছে, তখন পাকিস্তানে ট্রেন্ডিং চলছে ‘ আমার স্বামীই আমার সংস্কৃতি।’ পাকিস্তানি সাংবাদিক শিরাজ হাসানও একই কথা লিখেছেন।

লাহোরের আইনজীবী রীমা উমর সাদফের এই ভিডিওটি টুইট করে লিখেছেন, ‘আজ অনেক উদারপন্থি এসেছেন।’ 

কেউ কেউ আবার প্রশ্ন করছেন, পুরুষ আসলে স্ত্রী চায় না কি দাসী? আবদুল্লাহ ইমরান নামে একজন একটি ইমোজি দিয়ে তার জবাবে লিখেছেন, ‘সব পুরুষ সাদফ কানওয়ালের সাথে একমত যে বিয়ে মানে দাসী পাওয়া।’

সোহাইব নামের একজন লিখেছেন, ‘সাদফ কানওয়াল, আপনি আপনার স্বামীর দাসী হয়ে খুশি থাকুন। এটা আপনার জন্য ভালো। আমি চাই না আমার মেয়ে এভাবে ভাবুক।’

পাকিস্তানি কৌতুক অভিনেতা আলী গুল পীর সাদফের সাক্ষাৎকারের অডিওর সঙ্গে নিজের ভিডিও জুড়ে দিয়ে ব্যঙ্গ করেছেন তার সমস্ত বক্তব্যকে। আলীর এই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।

সাদফের সমর্থনে অনেকে আবার তার পাশেও দাঁড়িয়েছেন। রানা গুফরান নামের একজন লিখেছেন, ‘এতে সমস্যা কি। তিনি এই উপমহাদেশের সংস্কৃতির কথা বলছেন এবং এটি নিয়ে গর্বিত হওয়া উচিত। সাদফকে যেভাবে উপহাস করা হচ্ছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে যে, পুরুষের অধিকারের কোনোকিছুই মানুষের পছন্দ না।  

অনুষ্ঠানে সাদফের সঙ্গে তার স্বামী শাহরোজও ছিলেন। তিনি বলেন, নারীরা যা করতে পারে, পুরুষরা তা করতে পারে না। দুজনকেই তাদের জায়গা বুঝতে হবে। আল্লাহ উভয়কেই ভিন্ন ভিন্ন ভূমিকা দিয়েছেন। যদি তা না হতো, তাহলে আল্লাহ দুজনকে আলাদা করে দিতেন না। নারী-পুরুষ ভিন্ন চিন্তা করে। তারা একে অপরকে শ্রদ্ধা করবে, এটাই সমতা। 

এনএফ