রাষ্ট্রক্ষমতার দখল নিতে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে লড়াইরত অস্ত্রধারী তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে অবস্থিত দেশটির গণমাধ্যম ও তথ্য কেন্দ্রের প্রধান দাওয়া খান মেনাপালকে দারুল আমান সড়কে শুক্রবার গুলি করে হত্যা করেছে। 

বিবিসি জানিয়েছে, মেনাপাল নিয়মিত আফগান সরকারের অবস্থান নিয়ে টুইট করতেন। টুইটারে তার অনুসারী ছিল ১ লাখ ৪২ হাজারের বেশি। গত বুধবার কাবুলে আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বাড়িতে তালেবান হামলার রেশ না কাটতেই খুন হলেন মেনাপাল।

তালেবান মুখপাত্র জবিউল্লা মুজাহিদ দায় স্বীকার করে জানিয়েছেন, ‌‘যাবতীয় সরকারি প্রচারের দায়িত্বে থাকায় ইনফরমেশন অ্যান্ড মিডিয়া সেন্টারের পরিচালক দাওয়া খানকে খুন করা হয়েছে। ওই সরকারি কর্মকর্তা কৃতকর্মের সাজা পেয়েছেন।’

গত বুধবার আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ খান মোহাম্মদির বাড়িতে হামলা চালিয়েছিল চার অস্ত্রধারী তালেবান জঙ্গি। তবে ওই হামলায় প্রতিরক্ষামন্ত্রী বিসমিল্লাহ খানের কিছু না হলেও চার জঙ্গি ও কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীসহ মোট ১২ জন নিহত হন। 

মার্কিন ও বিদেশি সেনারা আফগানিস্তান ছাড়তে শুরু করার পর আফগানিস্তানে একের পর এক এলাকা দখল করছে তালেবান। ভারতীয় সাংবাদিক দানিশ সিদ্দিকি, জনপ্রিয় আফগান অভিনেতা নজর মহম্মদ ইতোমধ্যেই তালেবানের হাতে খুন হয়েছেন।

হামলার পর আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মিরওয়াইজ স্টানেকজাই বলেছেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে হিংস্র সন্ত্রাসীরা আবারও এক কাপুরুষোচিত কাজ করেছে। একজন দেশপ্রেমিক আফগান তাদের হাতে শহীদ হয়েছেন।’

সরকারি বাহিনীর কাছ থেকে নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টায় আফগানিস্তানের দক্ষিণ এবং পশ্চিমাঞ্চলের তিনটি প্রধান শহরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তালেবান যোদ্ধাদের লড়াই চলছে। তালেবানরা কান্দাহার, হেরাত ও লস্কর গাহ শহরের অংশে ঢুকে পড়েছে।

দেশটির প্রধান শহরগুলোর ভাগ্য নিয়ে ভীষণ উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। উভয়পক্ষ নিয়ন্ত্রণ নিজেদের দখলে নিতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে সরকারি সেনারা কতদিন নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পারবে সেটাই বড় প্রশ্ন। স্থানীয়রাও বাড়িঘর ছেড়ে পালাচ্ছেন।

বিবিসি বলছে, তালেবান মিলিশিয়ারা ইতোমধ্যে অর্ধেক আফগানিস্তান নিজেদের দখলে নিয়েছে। এর মধ্যে প্রতিবেশী দুই দেশ পাকিস্তান ও ইরানের সঙ্গে ‌‘বর্ডার ক্রসিং’ রয়েছে। তবে তালেবান অবশ্য দেশের ৯০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার দাবি করছে। 

এএস