করোনাভাইরাসের উৎস বা জন্মস্থান বলে পরিচিতি পাওয়া দেশ চীনে করোনায় চলতি বছর সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছে বৃহস্পতিবার। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ন্যাশনাল হেলথ কমিশনের বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে ন্যাশনাল হেলথ কমিশন জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার চীনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১২৪ জন, যা চলতি বছর একদিনে সর্বোচ্চ আক্রান্তের রেকর্ড।

এছাড়া, আরও ৫৮ জন করোনার উপসর্গ বহন করছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে বিবৃতিতে। তবে উপসর্গ বহনকারীরা করোনায় আক্রান্ত কি না কিংবা ঠিক কী কারণে তাদেরকে আক্রান্ত রোগীর তালিকায় ধরা হলো না- সে ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তিতে কিছু জানায়নি কমিশন।

গত দেড় বছর ধরে যে করোনা মহামারিতে বিশ্ব কাঁপছে, সেই রোগে আক্রান্ত রোগী প্রথম শনাক্ত হয়েছিল চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। করোনায় প্রথম মৃতুর ঘটনাও ঘটেছিল উহানে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে উহানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম যে ব্যক্তি মারা গিয়েছিলেন, তার বয়স ছিল ৬১ বছর। তখনও এ রোগের কোনো নাম দেওয়া হয়নি। চীনের সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল- ‘অপরিচিত ধরনের’ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ওই ব্যক্তির।

পরে অবশ্য জানা যায়, সার্স গ্রুপের ভাইরাস সার্স-কোভ ২ এ আক্রান্ত হয়ে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। নতুন এই ভাইরাসটির বৈজ্ঞানিক নাম সার্স-কোভ ২ হলেও সাধারণভাবে এটি পরিচিতি পায় নভেল করোনাভাইরাস নামে।

করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পরপরই সরকারি আদেশে বন্ধ করে দেওয়া হয় উহানের কেন্দ্রে অবস্থিত সি ফুড মার্কেট, যেখানে সামুদ্রিক মাছ ও প্রাণীর পাশাপাশি জীবিত বন্যপ্রাণী ও বন্যপ্রাণীর মাংসও বিক্রি হতো।

চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সি ফুড মার্কেটে বিক্রির জন্য আনা বাদুড়, প্যাঙ্গোলিন বা অন্য কোনো প্রাণী থেকে মানবদেহে সংক্রমিত হয়েছে ভাইরাসটি।

তবে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমের কয়েকটি দেশের অভিযোগ, উহানের গবেষণাগারে কৃত্রিমভাবে এই ভাইরাসটি প্রস্তুত করা হয়েছিল এবং গবেষণাকর্মীদের অসাবধানতার ফলে এটি ছড়িয়ে পড়েছে। চীন অবশ্য বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।

এদিকে করোনা মহামারি শুরুর প্রায় সঙ্গে সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী লকডাউন ও কঠোর বিধিনিষেধ জারির মাধ্যমে করোনা সংক্রমণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এই দেশটি।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত চীনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯৩ হাজার ৫৯৮ জন এবং এ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন মোট ৪ হাজার ৬৩৬ জন।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ