২০০১ সালে লন্ডনে তোলা এক ছবিতে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সাথে ভার্জিনিয়া জোফ্রে

যুক্তরাষ্ট্রের যে নারী অভিযোগ করেছিলেন, ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের দ্বিতীয় পুত্র প্রিন্স অ্যান্ড্রুর সঙ্গে যৌনকর্ম করার জন্য ১৭ বছর বয়সে তাকে যুক্তরাজ্যে নিয়ে আসা হয়েছিল, তিনি এবার যৌন নিপীড়নের অভিযোগে নিউইয়র্কে একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ভার্জিনিয়া জোফ্রের দাবি, প্রিন্স অ্যান্ড্রুর দ্বারা যৌন সহিংসতার শিকার হয়েছেন। সাজাপ্রাপ্ত যৌন অপরাধী এপস্টেইনের বিরুদ্ধেও যৌন নিপীড়নের একজন অভিযোগকারী ভার্জিনিয়া জোফ্রে। তবে জোফ্রের অভিযোগ বরাবরই নাকচ করে আসছেন প্রিন্স অ্যান্ড্রু।

নিউইয়র্কের শিশু নির্যাতনবিরোধী আইনের আওতায় মামলাটি দায়ের করেছেন জোফ্রে। এই আইনে নিপীড়নকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের অধিকারের আওতা বাড়ানো হয়েছে। ফলে গুরুত্বের সঙ্গে মামলাটি নেওয়া হয়েছে।  

জোফ্রের অভিযোগ নিয়ে ২০১৯ সালে ব্রিটিশ সম্প্রচারমাধ্যম বিবিসিকে প্রিন্স অ্যান্ড্রু বলেন, ‌‘এটা ঘটেনি। আমি সুনির্দিষ্টভাবেই বলতে পারি, এমনটা কখনোই ঘটেনি। এই ভদ্রমহিলার সঙ্গে কখনোই পরিচয় হয়েছে বলে আমার মনে পড়ছে না।’

পরে দেওয়া এক বিবৃতিতে প্রিন্স অ্যান্ড্রু বলেছিলেন, ‘জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে অবিবেচনাসুলভ সম্পর্ক রাখার জন্য আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে অনুশোচনা করে যাচ্ছি। তার আত্মহত্যার ফলে অনেক প্রশ্নের উত্তর অজানা থেকে গেলো, বিশেষ করে তার নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের জন্য। যারা এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তাদের আমি গভীরভাবে সমবেদনা জানাই।’

প্রিন্স অ্যান্ড্রু আরও বলেছিলেন, ‘আমি শুধুমাত্র আশা করতে পারি যে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তারা পুনরায় নতুন করে নিজেদের জীবন গড়ে তুলতে পারবেন। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে অবশ্যই যথাযথ আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে তাদের তদন্তে সহায়তা করতে আগ্রহী।’
 
যৌন নিপীড়নের অভিযোগে নিউইয়র্কের আদালতে প্রিন্স অ্যান্ড্রুর বিরুদ্ধে ভার্জিনিয়া জোফ্রে মামলা দায়ের করার পর এই খবরের বিষয়ে বক্তব্য জানতে ব্রিটিশ রাজপ্রাসাদ বাকিংহ্যাম প্যালেস এবং ডিউক অব ইয়র্কের প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বিবিসি।

মামলায় বলা হয়েছে, সেই সময় লন্ডনে এপস্টেইনের একজন সহযোগী গিলেইন ম্যাক্সওয়েলের বাড়িতে তখন ভার্জিনিয়া রবার্টস নামে পরিচিত জোফ্রেকে যৌন নিপীড়ন করেছেন ডিউক। পরবর্তীতে ম্যানহাটনে এপস্টেইনের বাড়িতে ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডের লিটল সেন্ট জেমসেও নিপীড়ন করেন।

এপস্টেইনের সঙ্গে মিলে চারজন অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েকে যৌন নিপীড়ন করার ফেডারেল অভিযোগের ব্যাপারে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন ম্যাক্সওয়েল। আগামী নভেম্বরে তার বিরুদ্ধে বিচার শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।

নিউইয়র্কের শিশু নির্যাতনবিরোধী আইনকে গত বছর গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমো যুগান্তকারী অভিহিত করে বলেছিলেন, এর ফলে যারা অপ্রাপ্ত বয়সে নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, যেসব অপরাধ জানা যায়নি বা বিচার হয়নি, সেগুলোর বিচার প্রাপ্তির পথ তৈরি হয়েছে।

২০১৯ সালে আইনটি জারি করা হয়। আইন অনুযায়ী, সময় উত্তীর্ণ হয়ে যাওয়ার কারণে এর আগে যেসব অভিযোগ আনা যায়নি, সেসব অভিযোগ দায়ের করার জন্য এক বছর সময় দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সেই সময়সীমা এই বছরের ১৪ আগস্ট পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।

এএস