আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করা শুরু করেছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী তালেবান। চারপাশ দিয়ে একযোগে রাজধানীতে প্রবেশ করছে তারা।

আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং তালেবান বিষয়টি নিশ্চিত করেছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আলজাজিরা।

আলজাজিরা বলছে, তালেবান যোদ্ধারা কাবুলে প্রবেশ করা শুরু করলেও এটা এখনো পরিষ্কার নয় যে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনির সরকার পাল্টা হামলার পথ বেছে নেবে নাকি আত্মসমর্পণের পথ বেছে নেবে।

মার্কিন সেনাসহ সব বিদেশি সেনা প্রত্যাহার প্রক্রিয়ার মধ্যেই আফগানিস্তানজুড়ে সরকারি বাহিনী ও তালেবান যোদ্ধাদের মধ্যে যুদ্ধের তীব্রতা গত কয়েক সপ্তাহে হঠাৎ করে বেড়ে যায়। বিশেষ করে তালেবানের দিক থেকে ঝড়ের গতিতে একের পর এক শহর দখলের তৎপরতা দেখা যায়। সবশেষ ১০-১২ দিনের প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন প্রদেশ দখলে নিয়েছে তালেবান। শনিবার পর্যন্ত তারা রাজধানী কাবুলের ১১ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে যায়।

রোববার (১৫ আগস্ট) ভোরে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশের রাজধানী শহর জালালাবাদ দখলে নেয় তালেবান যোদ্ধারা। আফগানিস্তানের পঞ্চম বৃহত্তম এই শহরটি রাজধানী কাবুল থেকে মাত্র ৮০ মাইল পূর্বে অবস্থিত।

এর আগে শনিবার চতুর্থ বৃহত্তম আফগান শহর মাজার-ই-শরীফও দখলে নেয় তালেবান। এরপর আজ (রোববার) দুপুরের দিকে রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করা শুরু করে তালেবান যোদ্ধারা। আফগানিস্তানের বড় শহরগুলোর মধ্যে একমাত্র রাজধানী কাবুলই তালেবানের দখলে যেতে বাকি আছে।

আফগান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, শহরের সব দিক থেকে রাজধানী কাবুলে প্রবেশ করা শুরু করেছে তালেবান যোদ্ধারা। কাতারের রাজধানী দোহায় অবস্থান করা তালেবানের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা বিষয়টি নিশ্চিত করে আলজাজিরাকে জানিয়েছেন, তালেবান যোদ্ধাদের সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া বিদ্যমান পরিস্থিতিতে যারা কাবুলের বাইরে চলে যেতে চায়, তাদেরকে নিরাপদে সেই সুযোগ করে দেওয়ারও আদেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া নারীদেরকেও নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে জানান তিনি।

এদিকে সামরিক শক্তি দিয়ে আফগান রাজধানী দখল করা হবে না বলে জানিয়েছে তালেবান নেতৃত্ব। অনলাইনে প্রকাশিত একটি বিবৃতিতে গোষ্ঠীটি জানিয়েছে, কাবুলের গেট ক্রস না করতে এবং জোর করে শহরটি দখলে না নিতে তাদের বাহিনীকে আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মানের কোনো ক্ষতি না করে শান্তি ও নিরাপত্তার সঙ্গে (ক্ষমতার) হস্তান্তর নিশ্চিত করতে আলোচনা চলছে।’

এছাড়া পরে দেওয়া আরেকটি বিবৃতিতে নিজেদের অর্থ, সম্পদ ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে আতঙ্কিত না হতে ব্যাংক, বাণিজিক প্রতিষ্ঠান ও উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তালেবান। সশস্ত্র যোদ্ধারা তাদের কোনো ক্ষতি করবে না বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

টিএম/জেএস