সমালোচনা নয়, আফগানদের সরানোতেই মূল মনোযোগ : কমলা হ্যারিস
কমলা হ্যারিস ও লি সেইন লুং
আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক অবনতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের তড়িঘড়ি সেনা প্রত্যাহারের সমালোচনা চলছে বিশ্বজুড়ে। তবে সেসব সমালোচনায় কান না দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র আপাতত আফগানিস্তানে ঝুঁকিতে থাকা লোকজনকে সরিয়ে আনাকেই মনোযোগের কেন্দ্রে রাখছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের কারণে সেখানে কী হয়েছে কিংবা প্রত্যাহার না করা হলে দেশটির অবস্থা কেমন হতে পারত, তা বিশ্লেষণের জন্য প্রচুর সময় পড়ে আছে।’
বিজ্ঞাপন
‘কিন্তু এখন, এই মুহূর্তে আফগানিস্তানের যেসব নাগরিক আমাদের সঙ্গে কাজ করেছিলেন এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে ঝুঁকিতে আছেন এমন নারী ও শিশুসহ আফগান নাগরিকদের নিরাপদে সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়াই আমাদের মনোযোগের কেন্দ্রে আছে। আমরা এই ব্যাপারটিতেই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।’
রোববার (২২ আগস্ট) দুই দিনের সফরে সিঙ্গাপুর গিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। সেখানে পৌঁছে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং-এর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার ও দেশটির সামরিক বাহিনীর হেডকোয়ার্টার পেন্টাগনে বিমান হামলা করেছিল মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন আল কায়দা নেটওয়ার্ক। সে সময় এই সংগঠনটির মূল ঘাঁটি ছিল তালেবানশাসিত আফগানিস্তান।
হামলার জেরে ওই বছরই আফগানিস্তানে সেনা অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র। অভিযানে পতন হয় তালেবান সরকারের। অভিযানের ২০ বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর চলতি বছর এপ্রিলে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
ঘোষণায় তিনি বলেন, ২০২১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন সেনা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। পরে এই সময়সীমাকে আরও এগিয়ে ৩১ আগস্ট করা হয়।
এদিকে, বাইডেন সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণার এক মাস পর, মে থেকে আফগানিস্তান দখলের অভিযান শুরু করে তালেবান বাহিনী এবং মাত্র তিন মাসের মধ্যে দেশের বেশিরভাগ এলাকাসহ রাজধানী কাবুল নিজেদের দখলে আনতে সক্ষম হয়।
বিগত শাসনামলে, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল- ৫ বছরে সাধারণ আফগান ও নারীদের প্রতি নিষ্ঠুর ও নিপীড়ণমূলক আচরণ ও অত্যাচার চালানোর জন্য কুখ্যাত কট্টর ইসলামপন্থি এই গোষ্ঠী কাবুল দখলের আগে থেকেই আফগানিস্তান থেকে পালানোর তোড়জোড় শুরু করেন অনেক আফগান। বিশেষ করে যারা যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করেছেন এবং তাদের অধীনে চাকরি করেছেন, তারা।
যুক্তরাষ্ট্র অবশ্য পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ঝুঁকিতে থাকা অনেক আফগানকে ফিরিয়ে নিচ্ছে। দেশটির সামরিক বাহিনীর সদর দফতর পেন্টাগনের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত ১০ হাজার আফগান নাগরিককে দেশটি থেকে সরিয়ে নিজ দেশে আশ্রয় দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সংবাদ সম্মেলনে কমলা হ্যারিসের পাশে উপবিষ্ট সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং বলেন, ‘আমরা আশা করছি, আফগানিস্তান ফের সন্ত্রাসবাদের উপকেন্দ্রে (এপিসেন্টার) পরিণত হবে না।’
সূত্র : রয়টার্স
এসএমডব্লিউ