যুদ্ধের চেয়ে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানকেই গুরুত্ব দিচ্ছে তালেবান-বিরোধী গোষ্ঠী এনআরএফ

আফগানিস্তানে তালেবান-বিরোধী একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী দাবি করেছে, তাদের হাজার হাজার যোদ্ধা যুদ্ধ করতে প্রস্তুত। ন্যাশনাল রেজিস্টেন্স ফ্রন্ট অব আফগানিস্তানের (এনআরএফ) বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক প্রধান আলী নাজারি বিবিসিকে বলেছেন, তারা শান্তিপূর্ণ সমঝোতা চান। কিন্তু যদি তা ব্যর্থ হয়... তাহলে আমরা কোনো ধরনের আগ্রাসন মেনে নেব না।

তালেবান জানিয়েছে, পাঞ্জশির উপত্যকায় এই গোষ্ঠীটির শক্তিশালী ঘাঁটি তারা ঘিরে ফেলেছে এবং বিরোধীদেরকেও ঘেরাও করা হয়েছে। এছাড়া রাজধানী কাবুলের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দিকে এখন অগ্রসর হচ্ছে তালেবান।

তালেবানের হাতে ক্ষমতা হারানো আফগান সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট আমরুল্লাহ সালেহ এখন পাঞ্জশিরে রয়েছেন। তিনিও এক টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, তালেবান যোদ্ধারা ওই উপত্যকার প্রবেশমুখে তাদের বাহিনী জড়ো করছে।

তবে হামলা ঠেকানোর জন্য পাঞ্জশির অঞ্চল- বিশেষ করে পাঞ্জশির উপত্যকার সুনাম রয়েছে। ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধের সময় সোভিয়েত সেনাদের হঠানো এবং ১৯৯০ এর দশকে তালেবানদের হটিয়ে দেওয়ার জন্য ওই অঞ্চল বিখ্যাত।

এখনও, ওই অঞ্চলটি এনআরএফের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এই গোষ্ঠীটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন আফগান প্রতিরোধের নায়ক বলে পরিচিত আহমদ শাহ মাসুদের ছেলে আহমদ মাসুদ। আহমদ শাহ মাসুদ ছিলেন একজন শক্তিশালী গেরিলা কমান্ডার। তিনি তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এরপর তিনি ১৯৯০ এর দশকে বিদ্রোহী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আফগান সামরিক বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

তালেবান নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরও ২০০১ সালে তাকে হত্যার আগ পর্যন্ত তালেবান শাসনের বিরুদ্ধে তিনিই ছিলেন প্রধান বিরোধী কমান্ডার।

নাজারি বিবিসি রেডিও ফোর-এর টুডে প্রোগ্রামে বলেছিলেন, সারা দেশ থেকে স্থানীয় যোদ্ধারা পাঞ্জশিরে জড়ো হচ্ছেন। তারা এরইমধ্যে স্থানীয়ভাবে প্রশিক্ষণ নিয়েছে এমন যোদ্ধাদের সাথে যোগ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই গোষ্ঠীর আওতায় ‘প্রতিরোধের জন্য হাজার হাজার বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে’। তবে বিবিসি এককভাবে এই দাবিটি যাচাই করেনি।

এই মুখপাত্র বলেন, ‘যাই হোক না কেন, কোনো ধরনের যুদ্ধে যাওয়ার আগে আমরা শান্তি এবং সমঝোতার চেষ্টা করবো।’

এনআরএফ- এর চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো দেশে বিকেন্দ্রীকৃত একটি শাসন প্রতিষ্ঠা। তিনি বলেন, ‘এনআরএফ বিশ্বাস করে যে, দীর্ঘস্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য আমাদের আফগানিস্তানের অন্তর্নিহিত সমস্যাগুলো সামনে আনতে হবে।’

‘আফগানিস্তান এমন একটি দেশ যেটি জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিয়ে গঠিত এবং সেখানে কেউই সংখ্যাগরিষ্ঠ নয়। এটি একটি বহু সংস্কৃতির রাষ্ট্র, তাই এখানে ক্ষমতার বণ্টন দরকার। এই বণ্টনটা এমনভাবে হতে হবে যাতে সবাই নিজেদের ক্ষমতায় দেখতে পায়।’

সূত্র: বিবিসি বাংলা

টিএম