রাজনৈতিক পালাবদলের জেরে আফগানিস্তান থেকে সম্প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যে আফগান অভিবাসীদের যাওয়ার যে হিড়িক পড়েছে, তা থামাতে পদক্ষেপ নিচ্ছে ইউরোপের ২৭ টি দেশের ঐক্যমঞ্চ ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

মঙ্গলবার বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইইউ সদস্যরাষ্ট্রসমূহের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক জরুরি বৈঠকে বসবেন। বৈঠক শেষে একটি বিবৃতিতে এ বিষয়ে ইইউয়ের অবস্থান স্পষ্ট করবেন তারা।

যে বিবৃতিটি মঙ্গলবার তারা আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করবেন, তার খসড়া ইতোমধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং সেটির একটি অনুলিপি পেয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

সেই অনুলিপিতে বলা হয়েছে, ১৫ আগস্ট তালেবান বাহিনী কাবুল দখলের পর থেকে আফগানিস্তান থেকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে বৈধ-অবৈধ আফগান অভিবাসীদের আগমনের যে ঢল শুরু হয়েছে, তাতে ইউরোপের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিয়ে ইইউ সদস্যরাষ্ট্রসমূহ উদ্বিগ্ন।

নিজেদের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এই ব্যাপক অভিবাসনের সমাপ্তি টানা প্রয়োজন এবং এ বিষয়ে আনুষাঙ্গিক পদক্ষেপ নিতে ইইউ সদস্যরাষ্ট্রগুলো নিজ নাগরিকদের প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টার টুইন টাওয়ারে হামলার জেরে ওই বছরই আফগানিস্তানে অভিযান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটো সেনাবাহিনী। অভিযানে পতন হয় দেশটিতে সে সময়ের ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের।

২০ বছর পর ২০২১ সালের এপ্রিলে সেই অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ঘোষণায় তিনি আরও জানান, চলতি বছর ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে সব মার্কিন ও ন্যাটো সেনাদের প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। পরে এই সময়সীমাকে এগিয়ে ৩১ আগস্ট করা হয়।

জো বাইডেন এই ঘোষণা দেওয়ার এক মাস পর, মে থেকে আফগানিস্তান দখলের অভিযান শুরু করে তালেবান বাহিনী এবং অবিশ্বাস্য দ্রুততার সঙ্গে মাত্র তিন মাসের মধ্যে দেশের ৩৪ টি প্রদেশের প্রায় সবগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার পর গত ১৫ আগস্ট কাবুলে প্রবেশ করে।

এদিকে, তালেবান বাহিনী কাবুলে প্রবেশের পর থেকেই বিপুল সংখ্যক আফগান নাগরিক শরণার্থী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে পাড়ি জমাতে ভীড় জমানো শুরু করে।

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অবশ্য প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, গত ২০ বছর যেসব আফগান নাগরিক মার্কিন ও ন্যাটো সেনা সদস্যদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে, তালেবান শাসনে তাদের জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় এনে সেসব আফগান নাগরিকদের সরিয়ে আনা হবে।

তবে কাবুল বিমানবন্দরে হট্টগোল ও অস্থিরতার সুযোগে এমন অনেক সাধারণ আফগান যু্ক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন, তালেবান শাসনে যাদের জীবন কোনোভাবেই ঝুঁকিতে নেই।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ