আফগানিস্তান ছাড়তে সন্তানদের সাথে নিয়ে কাবুল বিমানবন্দরে মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি বিমানে উঠছেন এক আফগান নারী। গত ২৪ আগস্টের ছবি

দীর্ঘ ২০ বছরের যুদ্ধ শেষে চূড়ান্তভাবে আফগানিস্তান ছেড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার মার্কিন সামরিক বাহিনীর সবশেষ ৫টি ফ্লাইট আফগান ভূখণ্ড ছেড়ে যায় বলে জানিয়েছে পেন্টাগন। তবে চূড়ান্তভাবে আফগানিস্তানের ভূখণ্ড ছাড়লেও কাবুলে প্রায় ২০০ মার্কিন নাগরিক ও দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক হাজার হাজার আফগানকে ফেলে রেখে গেছে যুক্তরাষ্ট্র।

মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) বার্তাসংস্থা এপি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার মার্কিন সামরিক বাহিনী চূড়ান্তভাবে আফগান ভূখণ্ড ছাড়লেও কাবুলে প্রায় ২০০ মার্কিন নাগরিককে ফেলে রেখে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক হাজার হাজার আফগান নাগরিককেও ফেলে রেখে গেছে দেশটি। কাবুল ছাড়ার জন্য তাদেরকে এখন তালেবানের অনুমতির ওপর নির্ভর করতে হবে বলেও জানিয়েছে এপি।

এদিকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্র চূড়ান্তভাবে আফগানিস্তান ছাড়লেও দেশটিতে থাকা মার্কিন নাগরিক ও আফগানদের বের করে আনতে চেষ্টা চালিয়ে যাবে ওয়াশিংটন। এছাড়া কাবুল বিমানবন্দর ফের চালু হলে বিমানের মাধ্যমে বা স্থলপথে তাদেরকে বের করে আনতে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিবেশিদের সঙ্গে কাজ করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, কাবুলের মার্কিন কূটনৈতিক মিশন স্থগিত করে দোহায় নিয়ে যাওয়া হলেও, আমেরিকান নাগরিক এবং যে আফগানদের যুক্তরাষ্ট্রের পাসপোর্ট রয়েছে, তারা চাইলে তাদের আফগানিস্তান ছাড়তে সহায়তা করা হবে।

ওয়াশিংটনে তিনি বলেন, এটি ছিল ব্যাপক সামরিক, কূটনৈতিক এবং মানবিক কর্মযজ্ঞ এবং যা যুক্তরাষ্ট্র অনেক চ্যালেঞ্জের সাথে বাস্তবায়ন করেছে। তার ভাষায়, ‘নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা হলো। সামরিক মিশন সমাপ্ত হয়ে নতুন এক কূটনৈতিক মিশন শুরু হলো।’

তবে ব্লিংকেন এটিও বলেছেন যে, তালেবানকে বৈধতা অর্জন করতে হবে। সেই সঙ্গে তারা তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে কি না এবং নাগরিকদের ভ্রমণে স্বাধীনতা দেওয়া, নারীদের অধিকার রক্ষা এবং সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে দমন করছে কি না-এসব বিষয় বিশ্ববাসীর নজরে থাকবে।

উল্লেখ্য, তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের এবং জোট বাহিনীর বিমানগুলোয় করে সব মিলিয়ে এক লাখ ২৩ হাজার বেসামরিক ব্যক্তিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। প্রতিদিন সাড়ে সাত হাজারের বেশি মানুষ কাবুল ছাড়ার সুযোগ পেয়েছেন।

টিএম