মার্কিন-নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক বাহিনী প্রত্যাহারের পর অচল হয়ে যাওয়া আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পুনরায় চালু করতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছে কাতার। বৃহস্পতিবার কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাবুল বিমানবন্দর সচল করতে তালেবানের সঙ্গে কাজ করছে তারা।

একই সঙ্গে আফগানিস্তান ত্যাগে লোকজনকে অনুমতি দিতে কট্টর ইসলামপন্থী গোষ্ঠী তালেবানের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দোহা। গত সোমবার মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ সৈন্য দলের চলে যাওয়ার পর থেকে কাবুলের বিমানবন্দর বন্ধ রয়েছে। তালেবান বলেছে, এই বিমানবন্দরের বেশিরভাগ অবকাঠামো ধ্বংস অথবা অচল হয়ে পড়েছে।

কাতারে তালেবানের রাজনৈতিক কার্যালয়ের উপ-প্রধান শের আব্বাস স্তানিকজাই বুধবার বলেছিলেন, সম্প্রতি কাবুল বিমানবন্দরে যে বিশৃঙ্খলা হয়েছে সেজন্য যুক্তরাষ্ট্রের অব্যবস্থাপনা দায়ী এবং বিমানবন্দর মেরামতের জন্য বর্তমানে ৩ কোটি মার্কিন ডলার প্রয়োজন। তিনি বলেন, আগামী দু’দিনের মধ্যে বিমানবন্দর পুনরায় কার্যক্রম শুরু করার জন্য প্রস্তুত হবে। 

কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আব্দুল রহমান আল-থানি বলেছেন, ‘আমরা কঠোর পরিশ্রম করছি এবং আমরা আশাবাদী যে, কাবুল বিমানবন্দর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চালু করতে সক্ষম হবো। আশা করছি, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আমরা কিছু ভালো খবর শুনবো।’

দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে কাতারের এই মন্ত্রী বলেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ... যে তালেবানরা আফগানিস্তানের জনগণের অবাধ দেশ ত্যাগ এবং স্বাধীনভাবে চলাচলে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে।’ 

এদিকে, বিমানবন্দর পুনরায় চালুর আলোচনার মাঝে কাতারের একদল প্রকৌশলীকে নিয়ে দোহা থেকে একটি বিমান বুধবার কাবুলে পৌঁছেছে। আফগানিস্তান থেকে বিদেশি সৈন্য ও ঝুঁকিপূর্ণদের উদ্ধারের অভিযান সোমবার রাতে শেষ হওয়ার পর প্রথম কোনও বিমান হিসেবে সেটি দেশটিতে প্রবেশ করে।

দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিশৃঙ্খলার পর বুধবার শত শত মানুষের ভিড় দেখা গেছে কাবুলের বিভিন্ন ব্যাংক এবং খাবারের দোকানে। ২০ বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটিয়ে লাখো মানুষকে কাবুল থেকে সরিয়ে সোমবার মধ্যরাতে মার্কিন বাহিনীর চূড়ান্ত বিদায়ের পর দেশটির ব্যাংক, হাসপাতাল এবং সরকারি প্রশাসন সচল রাখার দিকে এখন মনোনিবেশ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে তালেবান।

গত ১৪ আগস্ট আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতা তালেবানের দখলে যাওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক বাহিনী এক লাখ ২৩ হাজারের বেশি মানুষকে কাবুল থেকে সরিয়ে নেয়। কিন্তু দেশটিতে এখনও লাখ লাখ আফগান তালেবানের প্রতিশোধমূলক হামলা বা নির্যাতনের ঝুঁকিতে আছেন; যারা দেশ ছাড়তে মরিয়া হয়ে এখন সীমান্ত এলাকাগুলোতে ভিড় করেছেন।

সূত্র: এএফপি, রয়টার্স।

এসএস