আফগানিস্তানের শাসন ক্ষমতায় ফেরার পর এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে মঙ্গলবার নতুন সরকার ঘোষণা করেছে দেশটির সশস্ত্র ইসলামি গোষ্ঠী তালেবান। সরকার ঘোষণা হলেও দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটির সঙ্গে ভবিষ্যৎ সম্পর্ক নিয়ে সংশয়ের মধ্যে আছেন বিশ্ব নেতারা।

গত ১৫ আগস্ট কাবুলের পতনের পর মঙ্গলবার সরকার ঘোষণা করেছে তালেবান; তারপর এই গোষ্ঠীর সর্বোচ্চ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা প্রথমবারের মতো দেওয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘ভবিষ্যতে আফগানিস্তানের শাসনতান্ত্রিক সব বিষয় এবং জনজীবন ইসলামি শরিয়া আইন অনুযায়ী পরিচালিত হবে।’

পরিবর্তনের আশ্বাস দিয়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতায় আসা তালেবান বৈশ্বিক স্বীকৃতি পাওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু তালেবান যেসব ঘোষণা দিয়েছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, উচ্চ শিক্ষার আদৗ দরকার আছে কি-না সেটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তালেবানের শিক্ষামন্ত্রী শেখ মৌলভী নুরুল্লাহ মুনির।

ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, ‘আজ পিএইচডি ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রির কোনও মূল্য নেই। আপনারা দেখছেন যে, মোল্লা এবং তালেবানরা ক্ষমতায় আছেন; তাদের পিএইচডি, এমএ এমনকি হাই স্কুলের ডিগ্রিও নেই। কিন্তু তারা মহান।’

এই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে। টুইটারে একজন লিখেছেন, ‘কেন এই মানুষটি শিক্ষা নিয়ে কথা বলছে?

আরেকজন লিখেছেন, ‘উচ্চ শিক্ষার মন্ত্রী বলেছেন, উচ্চ শিক্ষার দরকার নেই।’ টুইটারে আরেক ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘শিক্ষা সম্পর্কে এ ধরনের লজ্জাজনক চিন্তাভাবনার ব্যক্তিদের ক্ষমতায় থাকা বিশেষ করে যুব ও শিশুদের জন্য বিপর্যয়কর।’

তালেবানের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। তালেবানের নীতি-নির্ধারণী পরিষদের প্রধানকে মোল্লা উপাধিতে ডাকা হয়। এই পরিষদের প্রধান মোহাম্মদ হাসান আখুন্দকে দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে তালেবান।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসীর তালিকায় থাকা আফগানিস্তানের চরমপন্থী গোষ্ঠী হাক্কানি নেটওয়ার্কের প্রধান সিরাজউদ্দিন হাক্কানিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী করে ৩৩ সদস্যের মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেছে তালেবান। যদিও এই মন্ত্রিসভায় কোনও নারীর জায়গা হয়নি।

এসএস