কাতারের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লোলওয়াহ আল-খাতার

‌‘আফগানিস্তানের নতুন শাসকগোষ্ঠী তালেবান এখন পর্যন্ত বাস্তববাদী মনোভাব প্রদর্শন করেছে। দেশটির অবিতর্কিত শাসক হিসেবে তালেবানকে তাদের কর্মের দ্বারা বিচার করা উচিত।’ তালেবানের ক্ষমতা দখলের তিন সপ্তাহের বেশি সময় পর আফগানিস্তানে নতুন সরকার গঠন নিয়ে এই মন্তব্য করেছে কাতার।

আফগান সংকট সমাধানে বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনায় মধ্যস্থতা করে এলেও সরকার গঠনের পর তালেবানকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়া থেকে বিরত রয়েছে দোহা। কাতারের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী লোলওয়াহ আল-খাতার ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপিকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘আফগানরা তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবেন; আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নয়।’

দীর্ঘদিন ধরে তালেবান এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পক্ষের মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেছে কাতার এবং এই দেশটিতে ২০১৩ সালে রাজনৈতিক কার্যালয় চালু করে আফগানিস্তানের সশস্ত্র এই গোষ্ঠী। কাতারের মধ্যস্থতায় আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা সৈন্য প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর গত মাসে দেশটির শাসন ক্ষমতা দখলে নেয় তালেবান।

আরও পড়ুন: বন্দুকের সামনে দাঁড়ালেন ‌‘অকুতোভয়’ আফগান নারী

আফগানিস্তানের নতুন শাসক গোষ্ঠীকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি না দিলেও কাতারের ওই মন্ত্রী বলেছেন, ‘তারা (তালেবান) মহান বাস্তববাদীতা দেখিয়েছে। চলুন সুযোগগুলো কাজে লাগাই... এবং তাদের কর্মকাণ্ড প্রত্যক্ষ করি।’

এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে লোলওয়াহ আল-খাতার বলেন, ‘তারা আফগানিস্তানের ডি ফ্যাক্টো শাসক। এটি নিয়ে কোনও প্রশ্ন নেই।’

মঙ্গলবার আফগানিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দের নাম ঘোষণা করেছে তালেবান। কাতারসহ জাতিসংঘের কোনও সদস্য রাষ্ট্রই এখন পর্যন্ত তালেবানের এই সরকারের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেয়নি।

বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে কাতারের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত খাতার বলেছেন, আফগানিস্তানের নতুন শাসকগোষ্ঠী তালেবানের ‘কিছু ভালো দৃষ্টিভঙ্গি’ দেখা গেছে। তিনি বলেন, নারী শিক্ষার্থীসহ অনেক লোকজন কাবুল ছেড়েছেন। এটি এক ধরনের দৃষ্টিভঙ্গির প্রদর্শন। কারণ তাদের সহযোগিতা ছাড়া এটা সম্ভব হতো না।

আরও পড়ুন: পিএইচডি-মাস্টার্স ডিগ্রির মূল্য নেই: আফগান শিক্ষামন্ত্রী

তবে তালেবানকে কাতারের স্বীকৃতি এত তাড়াতাড়ি আসবে না বলেও মন্তব্য করেছেন খাতার। তিনি বলেন, ‘আমরা স্বীকৃতি দেওয়ার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেই। কিন্তু আমরা তাদের থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্নও নই। আমরা মধ্যপন্থা অবলম্বন করছি।’

এদিকে, মঙ্গলবার তালেবান যে সরকার গঠন করেছে তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবান এবং চরমপন্থী গোষ্ঠী হাক্কানি নেটওয়ার্কের অনেক সদস্য যুক্তরাষ্ট্রের সন্ত্রাসী তালিকায় আছে; যাদের নিয়ে সরকার গঠন করায় ওই উদ্বেগ জানিয়েছে ওয়াশিংটন।

মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘এটি আফগানিস্তানের ‘তত্ত্বাবধায়ক’ সরকার। আমরা তালেবানকে তাদের কাজ অনুযায়ী বিচার করবো, কথায় নয়।’

এসএস