মডার্নার কোভিড টিকা বিশ্বব্যাপী প্রকোপ ছড়ানো করোনাভাইরাসের অতিসংক্রামক ধরন ডেল্টার সংক্রমণ ঠেকাতে সবচেয়ে বেশি কার্যকর। এই টিকা নিয়ে ডেল্টা ধরনে সংক্রমিত হলেও ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হচ্ছে না। রোগীর অবস্থা গুরুতর হচ্ছে না। এছাড়া অন্যদের চেয়ে দ্রুত সেরেও উঠছেন তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের ৯টি অঙ্গরাজ্যে গত জুন, জুলাই ও আগস্ট— এই তিন মাসে সমীক্ষা চালিয়ে গতকাল শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র সিডিসি। প্রসঙ্গত, সমীক্ষার ওই তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণের নেপথ্যে সবচেয়ে বড় ভূমিকা ছিল ভাইরাসটির অতিসংক্রামক ধরন ডেল্টার।

ডেল্টার সংক্রমণ ঠেকাতে মডার্নার টিকার চেয়ে অবশ্য একটু পিছিয়ে আরেক মার্কিন কোম্পানি ফাইজারের কোভিড টিকা। এই টিকা নেওয়া থাকলেও করোনার ডেল্টা ধরনের সংক্রমণ ভয়াবহ হয়ে উঠছে না ৮০ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রে। ওই জরিপে আরও দাবি করা হয়েছে, ফাইজারের টিকা নেওয়া রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না। 

তবে মডার্না ও ফাইজারের টিকার চেয়ে অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে অপর মার্কিন ওষুধ কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসনের কোভিড টিকা। জরিপে দেখা যাচ্ছে, করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের সংক্রমণ ঠেকাতে জনসন অ্যান্ড জনসনের কোভিড টিকার সাফল্যের হার মাত্র ৬০ শতাংশ।

সিডিসি ১৮ বা তার বেশি বয়সী ৩২ হাজারের বেশি মানুষকে নিয়ে সমীক্ষাটি চালিয়েছে। এর মধ্যে মডার্না, ফাইজার কিংবা জনসন অ্যান্ড জনসনের যে কোনো একটি কোভিড টিকা নেওয়া ব্যক্তিরা যেমন ছিলেন, ঠিক তেমনি কোভিডের কোনো টিকাই নেননি এমন মানুষজনকেও অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছিল সমীক্ষায়।

টিকা না নিলে সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ছে ৫-৭ গুণ

সিডিসির সমীক্ষা অনুযায়ী, তিন টিকার কোনো একটি নেওয়া থাকলে ডেল্টা সংক্রমণ যতটা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারছে, কোনো টিকা না নেওয়া থাকলে সেই ভয়াবহতা ৫ থেকে ৭ গুণ বাড়ে।

তবে আশার কথা, তিনটি টিকাই কমাতে পারছে ডেল্টার ভয়াবহতা। এতে রোগীদের হাসপাতালে ভর্তির ঘটনাও কমছে। ফলে, টিকা নেওয়ায় উল্লেখযোগ্যভাবে কমছে করোনায় মৃত্যুর হার।

এমআরএনএ টিকাই বেশি সফল

শুক্রবার প্রকাশিত সিডিসির সাপ্তাহিক ‘মর্বিডিটি অ্যান্ড মর্টালিটি’ রিপোর্ট বলছে, ‘সংক্রমণ ও রূপ বদলের দিক থেকে করোনা ধরনগুলোর মধ্যে এ পর্যন্ত যেটি সবচেয়ে বেশি বিপজ্জনক, সেই ডেল্টা ধরনে সংক্রমণের ভয়াবহতা ঠেকাতে পারছে মডার্না ও ফাইজারের মেসেঞ্জার আরএনএ বা এম-আরএনএ টিকা। বিশ্বে এই দুটি ছাড়া আর কোনো টিকা এই প্রযুক্তিতে তৈরি হয়নি।

এএস