মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি আদালতে অসুস্থ বোধ করায় তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিচার কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। বর্তমানে বিশ্রামে আছেন তিনি। অং সান সু চির আইনজীবী মিন মিন সোয়ে সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।

গাড়িতে করে যাত্রাজনিত কারণে সু চি অসুস্থতাবোধ করছেন উল্লেখ করে সোয়ে বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারি থেকে তিনি বন্দি অবস্থায় আছেন, কোথাও যাওয়ার অনুমতি তার ছিল না। এ কারণে আদালতে আসার পথে দীর্ঘ সময় ধরে গাড়িযাত্রার কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মাননীয় আদালতকে তিনি তার অসুস্থতার কথা জানিয়েছেন এবং বলেছেন, তার বিশ্রাম প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘যদিও এটি বড় কোনো অসুস্থতা নয়, কিন্তু তারপরও, যেহেতু তার বয়স হয়েছে, স্বাভাবিকভাবেই আমরা তার স্বাস্থ্যগত বিষয়ে উদ্বিগ্ন।’

চলতি বছর ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত ও গৃহবন্দি হন মিয়ানমারের নেত্রী সু চি, চলতি বছর যিনি ৭৬ বছর পূর্ণ করেছেন। সু চির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ ও ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে কয়েকটি মামলা করেছে মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক সরকার।

রাজধানী নেইপিদোর একটি আদালতে ইতোমধ্যে সেসব মামলার বিচার শুরু হয়েছে।

২০২০ সালে মিয়ানমারের জাতীয় নির্বাচনে ভূমিধস জয় পেয়েছিল সু চির নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্র্যাসি (এনএলডি)। পার্লামেন্টের ৮৫ শতাংশের ও বেশি আসনে জয়ী হয়েছিল এনএলডি প্রার্থীরা।

ব্যাপক এই বিজয়ে সংকট তৈরি হয় দেশটির শাসনব্যবস্থায়। কারণ, মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী, পার্লামেন্টের ২৫ শতাংশ আসন সামরিক বাহিনীর জন্য নির্দিষ্ট করা।

এই পরিস্থিতিতে নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ তোলে সেনাবাহিনী; কিন্তু দেশটির নির্বাচন কমিশন সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

তারপর গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের জাতীয় ক্ষমতা দখল করে সামরিক বাহিনী। গৃহবন্দি করা হয় অং সান সু চিকে এবং কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন তার দল এনএলডির বিভিন্ন স্তরের কয়েক হাজার নেতাকর্মী।

মিয়ানমারে গত কয়েকমাস ধরে চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলন এবং ক্ষমতাসীন জান্তার ব্যাপক দমনপীড়ণের জেরে প্রায় ভেঙে পড়ার অবস্থায় পৌঁছেছে দেশটির স্বাস্থ্যসেবা কাঠামো। বিশেষ করে এই মহামারি পরিস্থিতিতে করোনা টেস্ট ও টিকাদান কর্মসূচি প্রায় স্থবির অবস্থায় পৌঁছেছে।

তবে সামরিক সরকারের এক মুখপাত্র বার্তাসংস্থা এএফপিকে নিশ্চিত করেছেন, গৃহবন্দি থাকা অবস্থায় সু চি করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন। তাকে দেখভাল করার কাজে নিয়োজিত কর্মচারীরাও টিকার ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন বলে জানিয়েছেন ওই মুখপাত্র।

সূত্র : এএফপি

এসএমডব্লিউ