স্বাস্থ্যগত কারণ ব্যতীত গর্ভপাত নিষিদ্ধ করেছে চীন। চীনের মন্ত্রিসভার বিবৃতির বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

গর্ভপাত নারীস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর এবং এটি নারীদের উর্বরতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে- যুক্তিতে ২০১৮ সাল থেকে এ বিষয়ে কঠোর হওয়া শুরু করে চীন। ওই বছর বিবাহবহির্ভূত যৌনতাজনিত কারণে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করেছিল দেশটির সরকার। সাম্প্রতিক আদেশে তার ব্যাপ্তি আরও বাড়ানো হলো।

দেশটির জাতীয় হেলথ কমিশনের তথ্য বলছে, ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল- চার বছরে চীনে গর্ভপাত করিয়েছেন ৯০ লাখ ৭০ হাজার নারী, যা তার আগের চার বছর, অর্থাৎ ২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত মোট গর্ভপাতের চেয়ে ৫১ শতাংশ বেশি।

তবে এসব গর্ভপাতের মধ্যে স্বাস্থ্যগত কারণে কতজন নারী গর্ভপাত করিয়েছেন, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি। চীনে বর্তমানের যে নিম্ম জন্মহার তার সঙ্গে সরকারের সাম্প্রতিক এই আদেশের কোনো যোগসূত্র আছে কিনা তাও স্পষ্ট করেনি দেশটির মন্ত্রণালয়।

এখন পর্যন্ত যদিও চীন বিশ্বের সবচেয়ে ঘণবসতিপূর্ণ দেশ, তবে ১৯৫০ সালের পর থেকে গত কয়েক দশক ধরে দেশটিতে জন্মহার নিম্নমুখী। এর মধ্যে সদ্য শেষ হওয়া দশকে, ২০১১ থেকে ২০২০ সালে দেশটির সন্তান জন্মহার ছিল সবচেয়ে কম।

চীনের সরকার যদিও বর্তমানে সন্তান ধারণ নীতিতে পরিবর্তন এনেছে, প্রতি দম্পতিকে ৩ টি সন্তান নেওয়ার জন্য উৎসাহও দেওয়া হচ্ছে, তবে তাতে বাস্তব পরিস্থিতির তেমন পরিবর্তন হচ্ছে না।

দেশটির সমাজ-রাজনীতি বিশ্লেষকদের মতে, চীনে জন্মহার নিম্নমুখী হওয়ার প্রধান কারণ দু’টি। প্রথমত- দশকের পর দশক ধরে সরকারের এক সন্তান নীতি চালু রাখা এবং দ্বিতীয়ত, সন্তান লালন-পালনের খরচ।

চীনের সরকারের থিঙ্কট্যাঙ্ক প্রতিষ্ঠাণের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৫ সালে একটি সন্তানকে লালনপালন করতে একটি পরিবারের খরচ হতো প্রায় ৪ লাখ ৯০ হাজার ইউয়ান (৫৫ লাখ ৭১ হাজার ৩০০ টাকা)। ২০২০ সালে এই ব্যায় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৯৯ হাজার ইউয়ানে (১ কোটি ২৪ লাখ ৯৫ হাজার ৬৩০ টাকা)।

এসএমডব্লিউ