নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট ফিরে পেতে চান সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে নিজের বন্ধ অ্যাকাউন্ট ফেরত পেতে আদালতে আবেদন করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ জন্য স্থানীয় সময় শুক্রবার ফ্লোরিডার একটি ফেডারেল আদালতে আবেদন করেছেন তিনি।

স্থানীয় সময় শনিবার (২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। তবে এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি টুইটার।

যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের প্রতীক ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে হামলা ও সহিংসতা চালাতে সমর্থকদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগে গত জানুয়ারিতে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টুইটারে নিষিদ্ধ হন ট্রাম্প। ট্রাম্প সমর্থকদের সেদিনের সেই ঘটনায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ পাঁচজন নিহত হয়েছিলেন। এই হামলার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ভিত কেঁপে উঠেছিল।

এই ঘটনার পর ট্রাম্পের টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়। ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার হওয়া ওই অ্যাকাউন্টটিতে ট্রাম্পের প্রায় নয় কোটি অনুসরণকারী ছিলেন। কিন্তু ক্যাপিটল হিলে হামলায় ডোনাল্ড ট্রাম্প উসকানি দিয়েছেন, এমন অভিযোগ তুলে টুইটার কর্তৃপক্ষ বিশ্বের ক্ষমতাধর ব্যক্তিটির অ্যাকাউন্ট চিরতরে বন্ধ করে দেয়।

এছাড়া ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট বন্ধের পাশাপাশি গত জানুয়ারিতেই তার ৭০ হাজারের বেশি সমর্থকের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করার কথা জানিয়েছিল টুইটার কর্তৃপক্ষ। বন্ধ হয়ে যাওয়া ৭০ হাজারের বেশি এসব অ্যাকাউন্টের বেশিরভাগই চরমপন্থি গোষ্ঠী কিউঅ্যাননের।

এর আগে গত ৭ জানুয়ারি ফেসবুক ও ইন্সটাগ্রামেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। পরবর্তীতে ওভারসাইট বোর্ডের পর্যালোচনায় ফেসবুকে ট্রাম্পকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়।

তবে এরপর থেকে বিভিন্ন সময়ই নিজের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্টগুলো ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়ে আসছিলেন ট্রাম্প। সেসবে কাজ না হওয়ায় এবার সরাসরি আদালতের দ্বারস্থ হলেন সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।

এদিকে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নিজের টুইটার অ্যাকাউন্ট ফেরত পেতে আদালতে আবেদন করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আবেদনে টুইটারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে যুক্তি হিসেবে তালেবানের প্রসঙ্গ টেনেছেন তিনি।

আদালতে দেওয়া আবেদনে বলা হয়েছে, টুইটার কর্তৃপক্ষ তালেবানকে আফগানিস্তানজুড়ে তাদের বিজয়ের খবর নিয়ে নিয়মিত টুইট করতে দিয়েছে। অপরদিকে ‘বিভ্রান্তিকর তথ্য’ আখ্যা দিয়ে তার টুইটগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসির ক্যাপিটল ভবনে কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে হামলা চালায় ট্রাম্প সমর্থকরা। কংগ্রেসের যৌথ ওই অধিবেশনে সেদিন জো বাইডেনকে আনুষ্ঠানিক ভাবে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করার প্রস্তুতি চলছিল।

একপর্যায়ে ক্যাপিটল ভবনের নিরাপত্তা ব্যারিকেড ও মূল ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়েন ট্রাম্প সমর্থকরা। হামলাকারীদের অনেকেই ছিল সশস্ত্র। ভেতরে ঢুকে সিনেট হলে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় তারা।

শুধু তা-ই নয়, স্পিকার ন্যান্সি পেলোসিসহ বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতার কার্যালয়ও তছনছ করে তারা। হামলা-সংঘর্ষে এক পুলিশ সদস্যসহ নিহত হন পাঁচজন। এরপরই ফেসবুক, টুইটারসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে একে একে নিষিদ্ধ হন ট্রাম্প।

টিএম