বিশ্বের এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় আর্থিক কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস করেছে প্যান্ডোরা পেপার্স। তবে সেখানে নাম থাকা কয়েকজন বিশ্বনেতা ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। 

এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। সেখানে বলা হয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ,জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ ২, কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াতা, চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্দ্রেজ বাবিজ এবং চিলির প্রেসিডেন্ট সেবাস্টিয়ান পিনেরা দাবি করেছেন, দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট কোনো কাজের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নেই।

বিশ্বের ১১৭টি দেশের দেড়শ গণমাধ্যমের ৬ শতাধিক সাংবাদিকের ১৮ মাসের অনুসন্ধানে বিশ্বের এ যাবৎ কালের সবচেয়ে বড় আর্থিক এক কেলেঙ্কারির তথ্য ফাঁস হয়েছে প্যান্ডোরা পেপার্সে। ওয়াশিংটনভিত্তিক অনুসন্ধানী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক কনসোর্টিয়াম ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অব ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টসের (আইসিআইজে) পক্ষে বিশ্বের ১৪টি কোম্পানির প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ গোপনীয় আর্থিক দলিলপত্র বিশ্লেষণ করে রোববার (৩ অক্টোবর) বিস্তারিত প্রকাশ করেছে।

একটি দলিলে দেখা গেছে, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি ও জমি কেনাবাবদ গোপনে ১০ কোটিরও বেশি ডলার খরচ করেছেন ১৯৯৯ সাল থেকে জর্ডানের ক্ষমতার কেন্দ্রে আসীন বাদশাহ আবদুল্লাহ ২। সোমবার এক বিবৃতিতে জর্ডানের রাজার প্রাসাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘দেশের বাইরে বাদশাহর সম্পদ থাকা অস্বাভাবিক নয়, তবে সেই সম্পদ দুর্নীতির মাধ্যমে কেনা হয়নি।’

রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন ইতমধ্যে প্যান্ডোরা পেপার্সকে ‘অস্পষ্ট’ বলে উল্লেখ করেছে। সোমবার ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ সাংবাদিকদের এ সম্পর্কে বলেন, ‘প্যান্ডোরা পেপার্সে কী বলতে চাইছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং তার ঘনিষ্ঠ ‍সহযোগীদের কোথাও কোনো অবৈধ অর্থ নেই- এটি নিশ্চিত।

প্যান্ডোরা পেপার্সের দলিলে দেখা গেছে, ফ্রান্সের দক্ষিণে দু’টি বিলাসবহুল বাড়ি কিনতে একটি অফশোর কোম্পানিতে ১২ মিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগ করেছিলেন চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী অ্যান্দ্রেস বাবিজ।

চলতি সপ্তাহে চেক প্রজাতন্ত্রে জাতীয় নির্বাচন হবে, যেখানে অন্যতম প্রার্থী দেশটির বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বাবিজ। সোমবার এক টুইটবার্তায় বাবিজ বলেন, জনগণের কাছে তার ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য বিরোধী দলের লোকজন ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার নাম এই কেলেঙ্কারিতে ঢুকিয়েছে। তিনি কোনো প্রকার দুর্নীতির সঙ্গে কখনও যুক্ত ছিলেন না।

চিলির বর্তমান প্রেসিডেন্ট সেবাস্টিয়ান পিনেরার বিষয়ে প্যান্ডোরা পেপার্সের একটি নথিতে দেখা গেছে, তিনি তার ছোটবেলার এক বন্ধুর কাছে দু’টি খনি গোপনে বিক্রি করেছেন। একটি খনি দস্তার এবং অপরটি লোহার। এই খনি দু’টির অবস্থান দেশটির ডমিঙ্গো অঞ্চলে।

পিনেরার কার্যালয় থেকে সোমবার বলা হয়েছে, এ বিষয়ক কোনো ঘটনা ঘটেনি এবং খনি বিক্রির তথ্যও সঠিক নয়।

এসএমডব্লিউ