নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় মাইদুগুরি এলাকার দালোরি গ্রামে বোকো হারামের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ঘর-বাড়ি। ২০১৬ সালের জানুয়ারি মাসের ছবি

আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় সশস্ত্র ডাকাতদের হামলায় কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হয়েছেন। দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় জামফারা প্রদেশে এই ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের পর ডাকাতরা ওই এলাকার দোকান ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বৃহস্পতিবার (৭ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

জামফারা প্রদেশের দুই বাসিন্দার বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, নাইজেরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওই এলাকায় সশস্ত্র সন্ত্রাসী, ডাকাত ও অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা অভিযান পরিচালনা করছে দেশটির সরকার। অভিযানের অংশ হিসেবে এলাকাটিতে টেলিযোগাযোগ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রেখেছে নাইজেরীয় সরকার। তবে সরকারি বাহিনীর এই অভিযানের মধ্যেই সেখানে ডাকাতদের হামলা ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটল।

ওই দুই বাসিন্দা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে জামফারা প্রদেশের কুরিয়ান মাদারো গ্রামে মোটর বাইকে করে বহুসংখ্যক ডাকাত প্রবেশ করে। এরপরই গ্রামবাসীদের ওপর হামলা করে তারা।

আবু বকর ইয়াকুব নামে কুরিয়ান মাদারো গ্রামের এক বাসিন্দা রয়টার্সকে জানান, গ্রামে প্রবেশের পর সশস্ত্র ওই ডাকাত দল গ্রামবাসীদের ওপর এলোপাথাড়ি গুলিবর্ষণ শুরু করে। কার্যত তারা গ্রামবাসীদেরকে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। তবে এর আগেই ডাকাতদের গুলিতে অনেকে নিহত হন।

এদিকে পার্শ্ববর্তী কেব্বি প্রদেশের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষক আবু বকর আবদুল্লাহ আল হাসান এই হামলার তথ্য নিশ্চিত করেছেন। জামফারা প্রদেশে তার কিছু আত্মীয় বসবাস করেন। তিনি জানান, হামলার কারণে প্রাণহানির ঘটনা ছাড়াও কম-বেশি অনেকেই আহত হয়েছেন।

অবশ্য ঘটনার বিষয়ে মন্তব্য জানতে বার বার চেষ্টা করেও জামফারা প্রদেশের পুলিশের মুখপাত্র মোহাম্মদ শেফুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি রয়টার্স।

পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম বৃহৎ দেশ নাইজেরিয়ার উত্তরাঞ্চলে ডাকাতি, হত্যা, লুটপাট, স্কুলের শিক্ষার্থীদের বন্দি ও জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়ের মতো অপরাধ প্রায় নিয়মিত ঘটনা হয়ে উঠেছে। এসব অপরাধ বন্ধে নাইজেরিয়ার কেন্দ্রীয় সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যথাযথ পদেক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ রয়েছে।

নাইজেরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের মতে, সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের পাশাপাশি জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও আইএস (ইসলামিক স্টেট) পশ্চিম আফ্রিকা শাখার সদস্যরাও নিয়মিত এসব অপরাধমূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ১২ বছর ধরে নাইজেরিয়াভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী বোকো হারাম ও আন্তর্জাতিক জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের বিরুদ্ধে লড়াই করছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।

টিএম