বার বার তাগাদা দেওয়া সত্ত্বেও যেসব স্বাস্থ্যকর্মী ও শিক্ষক-শিক্ষিকা করোনা টিকার ডোজ নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন, তাদের জন্য ‘টিকা না নিলে চাকরি নেই’ নীতি নিয়েছে নিউজিল্যান্ডের সরকার।

এক প্রতিবেদনে বার্তাসংস্থা এএফপি জানিয়েছে, সোমবার নিউজিল্যান্ড সরকারের করোনা প্রতিরোধ মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় যুগপৎভাবে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে। সেই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ১ ডিসেম্বরের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের যেসব ডাক্তার ও নার্স করোনা টিকার দুই ডোজ নিতে ব্যর্থ হবেন, পরের দিন ২ ডিসেম্বর থেকে তাদের চাকরি থাকবে না।

শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য এই মেয়াদ অবশ্য আরও এক মাস বাড়ানো হয়েছে। অর্থাৎ, ২০২২ সালের জানুয়ারির ১ তারিখের মধ্যে দেশটির যেসব শিক্ষক-শিক্ষিকা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ না করবেন, পরের দিন ০২ জানুয়ারি চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হবে তাদেরকে।

নিউজিল্যান্ডের করোনা প্রতিরোধ মন্ত্রী ক্রিস হিপকিন্স, যিনি একই সঙ্গে দেশটির শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করছেন- সোমবার এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে আমাদের সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র টিকা এবং এক্ষেত্রে আমরা কোনো প্রকার ছাড় দিতে প্রস্তুত নই।’

নিউজিল্যান্ডের চিকিৎসা বিষয়ক সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দ্য রয়্যাল নিউজিল্যান্ড কলেজ অব জেনারেল প্র্যাকটিশনার্সের প্রেসিডেন্ট সামান্থা মর্টন এক টুইটবার্তায় সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘দৃঢ়, কিন্তু জরুরি’ বলে উল্লেখ করেছেন।

নিউজিল্যান্ডের মাধ্যমিক স্কুলগুলোতে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের টিকার আওতায় আনতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে সোমবারের সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যখন করোনায় বিপর্যস্ত অবস্থা পার করছিল, সে সময় করোনা সংক্রমণ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। দেশটির নাগরিকরা প্রায় কোভিডপূর্ব জীবন-যাপনে ফিরে গিয়েছিলেন।

অবশ্য অন্য দেশ থেকে যেন কোভিড নিউজিল্যান্ডে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য আন্তর্জাতিক সীমান্ত বন্ধ রেখেছিল দেশটির সরকার।

কিন্তু দেশটির বাসিন্দারা বেশিদিন এই সুখ উপভোগ করতে পারেননি। করোনার অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার প্রভাবে আগস্ট থেকে ফের নিউজিল্যান্ডে বাড়তে শুরু করে সংক্রমণ।

‘জিরো কোভিড’ নীতির সাবেক দৃঢ় সমর্থক নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা অর্ডার্নও এক সময় মেনে নিতে বাধ্য হন- যতদিন ডেল্টা ধরন এই বিশ্বে থাকবে, ততদিন ‘জিরো কোভিড’ নীতি মেনে চলা সম্ভব নয়।  

এসএমডব্লিউ