চীন তাইওয়ানে হামলা চালালে যুক্তরাষ্ট্র রক্ষা করবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। চীন-তাইওয়ান সাম্প্রতিক উত্তেজনার ভেতরেই এই মন্তব্য করলেন তিনি। শুক্রবার (২২ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, বাইডেনের এমন মন্তব্যের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র কার্যত তাইওয়ান ইস্যুতে তাদের দীর্ঘদিনের নীতি থেকে বেরিয়ে এলো। চীন আক্রমণ করলে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানকে রক্ষা করবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেন, ‘হ্যা, তাইওয়ানকে রক্ষার ব্যাপারে আমাদের প্রতিশ্রুতি আছে।’

তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এমন মন্তব্যের পরে হোয়াইট হাউসের এক মুখপাত্র কয়েকটি মার্কিন সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, তাইওয়ান ইস্যুতে জো বাইডেনের মন্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয় না।

অবশ্য তাইওয়ানের সঙ্গে সাম্প্রতিক উত্তেজনা বৃদ্ধির পেছনে যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করে আসছে চীন। তাইওয়ানকে নিজেদের একটি প্রদেশ বলে মনে করে থাকে বেইজিং। অন্যদিকে চীনের প্রদেশ নয়, বরং নিজেকে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র বলে মনে করে থাকে তাইওয়ান।

তাইওয়ান পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, যা তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বে চীনা মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চীন বার বার তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করে আসছে দ্বীপটি।

চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে চার দিনে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সীমানার মধ্যে প্রায় ১৫০টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছিল চীন। এরপর থেকেই অঞ্চলটিতে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।

বিবিসি বলছে, মিত্র হলেও তাইওয়ানকে রক্ষার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’র নীতি চর্চা করে আসছে ওয়াশিংটন। আর এ কারণেই তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও ‘তাইওয়ান রিলেশন অ্যাক্ট’ নামে একটি চুক্তি অনুসারে দ্বীপটির কাছে অস্ত্র বিক্রি করে থাকে ওয়াশিংটন। চুক্তি অনুযায়ী, আত্মরক্ষার জন্যই তাইওয়ানকে সহায়তা করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।

অবশ্য চলমান এই উত্তেজনার মধ্যেই গত ৯ অক্টোবর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে তাইওয়ানের পুনরেকত্রীকরণ অবশ্যই সম্পূর্ণ করতে হবে। এই পুনরেকত্রীকরণ শান্তিপূর্ণভাবেই অর্জিত হওয়া উচিত, কিন্তু একই সাথে তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদের বিরোধিতার ক্ষেত্রে চীনের গৌরবময় ঐতিহ্য রয়েছে বলেও সতর্ক করেন।

এমনকি তাইওয়ানকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ফের যুক্ত করতে শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়নি বেইজিং। এই পরিস্থিতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বক্তব্য বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

টিএম