ইয়েমেনের একটি বিমানবন্দরের কাছে বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১২ জন নিহত হয়েছেন। শনিবার (৩০ অক্টোবর) দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় বন্দরনগরী এডেনের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রবেশমুখের কাছে এই বিস্ফোরণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। নিহতদের সবাই বেসামরিক নাগরিক।

শনিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা। তবে এটি পরিকল্পিত হামলা কি না, তাৎক্ষণিকভাবে সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এডেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, শনিবার বিমানবন্দরের বাইরের প্রবেশদ্বারের কাছে একটি ছোট ট্রাক বিস্ফোরিত হয়। নিরাপত্তা সূত্রগুলো বলছে, বিস্ফোরিত হওয়া ট্রাকটি পেট্রলজাত পণ্য পরিবহণ করছিল।

তবে ঘটনা যেটিই হোক, শনিবারের এই বিস্ফোরণটি ছিল খুবই শক্তিশালী। বিস্ফোরণের শব্দ পুরো এডেন শহরজুড়ে শোনা যায়। এছাড়া বিস্ফোরণের কারণে আশপাশের বাড়ি-ঘরের জানালাগুলো ভেঙে যায়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইয়েমেনের এক নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘এডেন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কাছে হওয়া ওই বিস্ফোরণে ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এছাড়া মারাত্মক আহত হয়েছেন আরও অনেক মানুষ। বিস্ফোরণের কারণ এখনও জানা যায়নি।’

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।

অভিযানের শুরুর পর ইয়েমেনের রাজনৈতিক সংকটের অবসান হওয়ার পরিবর্তে তা আরও তীব্র হয়ে ওঠে। বর্তমানে ইয়েমেনে কার্যত দুই শাসকগোষ্ঠী সক্রিয় আছে। সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সামরিক সহযোগিতার ওপর ভর করে দেশটির দক্ষিণাঞ্চল এখনও মনসুর হাদির নেতৃত্বাধীন সরকারের নিয়ন্ত্রণে আছে, অন্যদিকে উত্তরাঞ্চল সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে হুথি বিদ্রোহীরা।

অর্থাৎ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইয়েমেন সরকারের প্রধান কেন্দ্র হচ্ছে এডেন। সাম্প্রতিক সময়ে শহরটিতে সৌদি সমর্থিত সরকার ও হুথি বিদ্রোহীদের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।

ইয়েমেনের এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ‘ছায়াযুদ্ধ’ হিসেবে দেখা হয়। টানা গৃহযুদ্ধ ও সংঘাত চলার ফলে প্রায় ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসমৃদ্ধ এবং এক সময়ের স্বচ্ছল এই দেশ।

টিএম