যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মালিকানাধীন আন্তর্জাতিক কোম্পানি ট্রাম্প অর্গানাইজেশন ওয়াশিংটনের ঐতিহাসিক ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেল বিক্রির চুক্তিতে পৌঁছেছে। ৩৭৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে ট্রাম্পের এই হোটেল দেশটির সিজিআই মার্চেন্ট গ্রুপ কিনে নিচ্ছে।

চুক্তিতে পৌঁছার পর বিলাবহুল ওই হোটেলের সম্মুখভাগ থেকে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম মুছে ফেলার পরিকল্পনা করছে সিজিআই মার্চেন্ট গ্রুপ। সোমবার মার্কিন প্রভাবশালী দৈনিক ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এক প্রতিবেদনে ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেল বিক্রির এই তথ্য জানিয়েছে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বলছে, মিয়ামি-ভিত্তিক বিনিয়োগ কোম্পানিটি হিল্টন ওয়ার্ল্ডওয়াইড হোল্ডিংসের সঙ্গে পৃথক একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। সেই চুক্তি অনুযায়ী ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলকে ওয়াল্ডর্ফ অ্যাস্টোরিয়া নামে ব্রান্ডিং করা হবে।

ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেল কেনার বিষয়ে জানতে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি সিজিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও মন্তব্য জানাতে অস্বীকার করেছে কোম্পানিটি। ট্রাম্প অর্গানাইজেশন এবং হিল্টন গ্রুপও তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।

মার্কিন ক্যাপিটল থেকে হোয়াইট হাউস এবং পেনসিলভানিয়া অ্যাভিনিউয়ের সামান্য হাঁটা পথের ঐতিহাসিক ভবনটি ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের মালিকানাধীন নয়। এক সময় ক্যাপিটল শহরের প্রধান পোস্ট অফিস হিসেবে ব্যবহৃত এই ভবনটি যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের মালিকানাধীন।

২০১৩ সালে ট্রাম্পের রিয়েল এস্টেট কোম্পানি ৬০ বছরের জন্য ভবনটি ইজারা নেয়। সেই সময় এই ইজারা পরবর্তীতে আরও ৪০ বছরের জন্য বৃদ্ধির বিকল্প ব্যবস্থাও রাখা হয়।

১৯ শতকের শেষের দিকে নির্মিত ঐতিহাসিক এই ভবন ইজারা নেওয়ার পর ট্রাম্প অর্গানাইজেশন এর সংস্কার কাজে ২০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে। এরপর দেশটির জাতীয় ঐতিহাসিক স্থাপনায় জায়গা পায় ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেল।

যুক্তরাষ্ট্রের হাউস ওভারসাইট এবং গভর্নমেন্ট রিফর্ম কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালে হোটেলটি চালু করার পর থেকে গত বছরের আগস্ট পর্যন্ত ৭১ মিলিয়ন ডলারের বেশি লোকসান গুনেছে। এটি কখনই লাভের মুখ দেখতে পারেনি।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর বিশাল বারান্দা ও আকাশচুম্বী ক্লক টাওয়ারের জন্য পরিচিত এই স্থাপনা রিপাবলিকান কর্মকর্তা, দাতা এবং লবিস্টদের বৈঠকে সরগরম থাকতো। ২৬৩ কক্ষের এই হোটেলে ওয়াশিংটন সফরে আসা বিদেশি বিশিষ্ট অতিথিদের থাকার ব্যবস্থা করা নিয়ে সেই সময় দেশটির বেশ কয়েকজন আইনপ্রণেতা এবং অন্যান্য কর্মকর্তা উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। 

প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় থেকেও বেসরকারি ব্যক্তি মালিকানাধীন হোটেল ব্যবসা নিয়ে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা লঙ্ঘনের অভিযোগও তুলেছিলেন তারা। এই ঘটনায় মার্কিন কংগ্রেসের একটি তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে।

সূত্র: ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, রয়টার্স, এএফপি।

এসএস