অস্ট্রেলিয়ায় মহাত্মা গান্ধীর ব্রোঞ্জ মূর্তি ভাঙচুরের চেষ্টা করেছে দুষ্কৃতিকারীরা। মূর্তির থেকে গলা মাথা কেটে বাদ দেওয়ার চেষ্টা চালানো হয়েছে। ধারালো কিছু দিয়ে বারবার ঘষা হয়েছে গান্ধী মূর্তির গলার অংশে।

এক বিবৃতিতে এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন। এক বিবৃতিতে দুষ্কৃতিকারীদের এই ধরনের কাণ্ডকে অত্যন্ত ঘৃণ্য ও ন্যাক্কারজনক বলে উল্লেখ করছেন তিনি।

তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে প্রবাসী ভারতীয়দের মধ্যেও। এ ঘটনায় রীতিমতো হতবাক তাঁরা।

ভিক্টোরিয়া পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকাল সাড়ে পাঁচটা থেকে শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার মধ্যে এক বা একাধিক দুষ্কৃতিকারী বৈদ্যুতিক যন্ত্র (ইলেকট্রিক কাটার) ব্যবহার করে গান্ধী মূর্তিটির শিরশ্ছেদ করার চেষ্টা করেছিল।

পুলিশ আরও জানিয়েছে, নক্স ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ইউনিটের গোয়েন্দারা ইতিমধ্যেই বিষয়টি তদন্ত করছেন। বেশ কয়েকজন সাক্ষীকে তথ্য নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য আবেদন করেছেন গোয়েন্দারা।

ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মহাত্মা গান্ধীর ওই ব্রোঞ্জের মূর্তিটি অস্ট্রেলিয়া সরকারকে উপহার দেওয়া হয়েছিল ভারতের সরকার। অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণপূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ ভিক্টোরিয়ার রাজধানী মেলবোর্নের অস্ট্রেলিয়ান- ইন্ডিয়ান কমিউনিটি সেন্টারের প্রাঙ্গনে মূর্তিটি বসানো হয়েছিল।

দিন কয়েক আগে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন নিজে উপস্থিত থেকে ওই গান্ধী মূর্তিটি উন্মোচন করেছিলেন। সে সময় উপস্থিত ছিলেন ভারতের কনসাল জেমালের রাজ কুমার এবং অন্যান্য অস্ট্রেলিয়ান রাজনীতিকরা।

দুষ্কৃতীদের এই কাণ্ডের পর অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ঘটনার তীব্র নিন্দা করে জানিয়ে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘যেভাবে (মহাত্মা গান্ধীকে) অসম্মান করা হয়েছে, তা অত্যন্ত নক্কারজনক এবং হতাশাজনক।’

বিবৃতিতে মরিসন আরও জানিয়েছেন, অস্ট্রেলিয়ার মতো একটি দেশ, যা বিভিন্ন সংস্কৃতি এবং বিভিন্ন দেশের মানুষকে একসঙ্গে নিয়ে চলার দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে সফল বহুসাংস্কৃতিক দেশ হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছে, সে দেশে কোনও সাংস্কৃতিক স্মৃতিসৌধের উপর হামলা মেনে নেওয়া হবে না।

এ সম্পর্কে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যে বা যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী, তারা অস্ট্রেলিয়-ভারতীয় সম্প্রদায়ের প্রতি চরম অসম্মান দেখিয়েছে এবং এ জন্য তাদের লজ্জিত হওয়া উচিত।’

মেলবোর্নের প্রবাসী ভারতীয়রাও এই ধরনের ঘটনাকে ‘অত্যন্ত অপমানজক কাজ’ হিসেবে দেখছে এবং গোটা ঘটনায় ভীষণভাবে ব্যাথিত তারা। স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকি ফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনস অফ ভিক্টোরিয়ার সভাপতি সূর্য প্রকাশ সোনি বলেছেন, ‘ভারতীয়রা খুবই মর্মাহত এবং দুঃখিত। আমরা বুঝতে পারছি না কেউ কেন এমন নিচু কাজ করবে।’

অস্ট্রেলিয়া ইন্ডিয়া কমিউনিটি চ্যারিটেবল ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ভাসান শ্রীনিবাসন বলেন, ‘দুষ্কৃতীরা মূর্তির মাথা কেটে ফেলার চেষ্টা করছিল। ভিক্টোরিয়া প্রদেশে প্রায় ৩ লাখ ভারতীয়র বাস। আমি কখনও ভাবতে পারিনি যে ভিক্টোরিয়াতে এমন ঘটনা ঘটবে।’

এসএমডব্লিউ