‘কন্যাদান’ বা ‘কনকাঞ্জলি’র মতো প্রথা ভেঙে নতুন জীবনে পা রাখলেন ভারতে এক দম্পতি। নিজেদের বিয়েতে সারা জীবন একে-অপরকে ‘ভাতকাপড়’ জোগানোরও শপথ নিয়েছেন তারা। অভিনব এই বিয়ের অনুষ্ঠানের ভিডিও ইতোমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল।

পাত্র অর্কপ্রভ সিনহা পেশায় চিকিৎসক ও পাত্রী অচির্তা সিনহা একজন সমাজকর্মী। দুজনেরই বাড়ি বীরভূমের সিউড়িতে। অর্কপ্রভ ইন্দিরাপল্লীর বাসিন্দা, আর অর্চিতা বাঙালপাড়ার। রোববার তারা শুধু বিয়েই করলেন না, বার্তা দিলেন দিনবদলের।

অর্ক-অর্চিতার বিয়েতে ‘কন্যাদান’ হয়নি। শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার সময়ে মাকে ‘কনকাঞ্জলি’ও দেননি অর্চিতা। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের চিরাচরিত প্রথা হলো, বিয়ের পর স্ত্রীর ভাতকাপড়ের দায়িত্ব নেয় স্বামী। এই বিয়েতে বদলেছে সেই নিয়মও। অর্ক একা নন, বরং তাকেও জীবনভর ‘ভাতকাপড়’ জোগানোর শপথ নিয়েছেন অর্চিতা।

এমনকি, বিয়ের উপহার হিসেবে চিকিৎসক-স্বামীকে দিয়েছেন স্টেথোস্কোপ।

বিয়ের অনুষ্ঠানে কেন এভাবে একের পর এক প্রথা ভাঙলেন? এ বিষয়ে অর্চিতা বলেন, ‘এই ভাবনা পুরোপুরি ছিল আমার শাশুড়ির। তার মতে একটি ছেলেই কেন সবসময় মেয়ের দায়িত্ব নেবে? মেয়েও একটি ছেলের দায়িত্ব নিতে পারে। তার এই ভাবনায় আমি ভীষণ খুশি হয়েছি।’

‘বাড়িতে বলেছিলাম, কেন কন্যাদান হবে? কন্যা কী কোনো বস্তু? কোনো বস্তু বা দান করার বিষয় নয় যে দান করে দিলাম, আর দান হয়ে গেল। বাড়ির লোক মেনে নিয়েছে। কনকাঞ্জলিও হয়নি। কারণ, বাবা-মা’র ঋণ চাল ফেলে বা লোক দেখিয়ে শোধ করা যায় না।’ 

অর্চিতার এই সিদ্ধান্তে পাশে দাঁড়িয়েছে তার নিজের বাড়ি ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। অপরদিক এই সিদ্ধান্তে স্ত্রীকে সাহস যুগিয়েছেন অর্কপ্রভ।’

এমএইচএস