বিদ্যমান টিকা করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেবে না, এমন কোনো প্রমাণ এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।কোভিড-১৯ এর রূপান্তরিত নতুন সংস্করণের বিষয়ে জানতে বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞানীরা যখন রীতিমতো লড়াই করছেন, তখন ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড এই আশার বাণী শুনিয়েছে।

মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়টি বলেছে, গত বছরজুড়ে নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের উদ্ভব হওয়া সত্ত্বেও গুরুতর অসুস্থতার বিরুদ্ধে টিকাগুলো অব্যাহতভাবে উচ্চমাত্রার সুরক্ষা দিয়েছে। এছাড়া ওমিক্রনের ক্ষেত্রে টিকার সুরক্ষার কোনো পার্থক্য হবে—এমন কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি।

অত্যধিক রূপ বদলে ফেলা ওমিক্রনের বিরুদ্ধে টিকা ও অন্যান্য থেরাপিউটিকস ওষুধের পরীক্ষা চালাতে প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো ব্যাপক তোড়জোড় শুরু করেছে। করোনার এই ধরন অতি-দ্রুত বিস্তার এবং ভ্যাকসিনের সুরক্ষাকে ফাঁকি দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকে।

টিকার প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলো এবং বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ওমিক্রনের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত সামান্য তথ্য পাওয়া গেছে। এই ভ্যারিয়েন্টের প্রকৃত প্রভাব সম্পর্কে জানতে আরও কয়েক সপ্তাহ সময় লাগবে।

অক্সফোর্ডের সঙ্গে যৌথভাবে করোনা ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারক ব্রিটিশ-সুইডিশ কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে, তারা ইতোমধ্যে ওমিক্রনের বিরুদ্ধে টিকার পরীক্ষা শুরু করেছে। ওমিক্রন শনাক্ত হওয়া বতসোয়ানার মতো আফ্রিকার দেশগুলোতে তারা গবেষণা শুরু করেছেন।

ব্রিটিশ এই বিশ্ববিদ্যালয় বলেছে, তাদের কাছে সরঞ্জাম এবং প্রক্রিয়া প্রস্তুত আছে। যদি প্রয়োজন দেখা দেয়, তাহলে ওমিক্রনকে লক্ষ্য করে দ্রুত ভ্যাকসিন প্রস্তুত করা হবে।

মার্কিন ওষুধপ্রস্তুতকারক কোম্পানি ফাইজার বলেছে, ওমিক্রনের বিরুদ্ধে তাদের ভ্যাকসিন কেমন কাজ করছে, সেটি আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে জানা যাবে। অন্যদিকে, মডার্নার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওমিক্রনের অনেক রূপান্তরের কারণে এটি মোকাবিলায় নতুন ভ্যাকসিন দরকার হতে পারে বলে ধারণা পাওয়া গেছে।

মঙ্গলবার ইউরোপের ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইউরোপীয় পার্লামেন্টকে বলেছে, ভ্যাকসিনের অভিযোজনের প্রয়োজন হবে কি-না তা এখনও জানা যায়নি। তবে নতুন একটি ভ্যাকসিন প্রস্তুত করার জন্য তাদের তিন থেকে চার মাস সময় লাগতে পারে।

গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয় স্পাইক প্রোটিনে ৩২ বার রূপান্তর ঘটানো করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন। ইতোমধ্যে দেশটিতে এই ধরনে আক্রান্ত ২২ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে।

তবে মঙ্গলবার নেদারল্যান্ডস বলছে, ২৪ নভেম্বরের ৫ দিন আগে, ১৯ নভেম্বর নেদারল্যান্ডসে শনাক্ত হয়েছিল ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী। দেশটির সরকারি স্বাস্থ্যসেবা কর্তৃপক্ষ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ এ তথ্য জানিয়েছে।

দক্ষিণ আফ্রিকা ও নেদারল্যান্ডস ছাড়াও অস্ট্রেলিয়া, বেলজিয়াম, বতসোয়ানা, ব্রিটেন, কানাডা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, জার্মানি, হংকং, ইসরায়েল, নাইজেরিয়া, ইতালিসহ ১৮ দেশে এই ধরনটিতে আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গেছে। ওমিক্রনকে ‘উদ্বেগজনক ধরন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

সূত্র: ব্লুমবার্গ।

এসএস