ছবি: সিডনি মর্নিং হেরাল্ড

ব্রিটিশ ট্যাবলওয়েড পত্রিকা দ্য মেইলের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত গোপনীয়তার লঙ্ঘণের মামলায় যে জয় পেয়েছিলেন যুক্তরাজ্যের রাজবধূ মেগান মার্কেল, তা বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

চলতি বছরের গোড়ার দিকে যুক্তরাজ্যের হাইকোর্টের বিচারক মার্ক ওয়ার্বি মামলার বাদি মেগান মার্কেলের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন। তারপর ঘোষিত রায় পুনর্বিবেচনা করার জন্য আবেদন করেছিল আসামিপক্ষ দ্য মেইল।

বৃহস্পতিবারের (০২ ডিসেম্বর) শুনানিতে সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। পাশপাশি বলেছেন, পূর্বের রায়ই বহাল থাকবে।

মামলার বিবরণীতে জানা যায়, যুক্তরাজ্যের রাজপরিবারের কনিষ্ঠ উত্তরাধীকার ও রানী এলিজাবেথের নাতি রাজপুত্র হ্যারির সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার আগে, ২০১৮ সালের আগস্টে নিজের বাবা থমাস মার্কেলকে একটি চিঠি লিখেছিলেন মেগান।

৫ পৃষ্ঠার সেই চিঠিতে হ্যারির সঙ্গে নিজের সম্পর্কের বিষয়টি বাবাকে জানিয়েছিলেন তিনি, পাশাপাশি বিভিন্ন কারণে তার সমালোচনাও করেছিলেন। তবে অসুস্থ থাকার কারণে সেই চিঠিটি পাননি থমাস মের্কেল।

২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেই চিঠি নিয়ে প্রতিবেদন করে দ্য মেইল। প্রতিবেদনে সেই চিঠির অনুলিপিও সংযুক্ত করে দেয়।

তার পরপরই ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘণের অভিযোগে দ্য মেইলের বিরুদ্ধে মামলা করেন মেগান। মামলার অভিযোগে তিনি বলেন, ‘পত্রিকাটি যা করেছে তা অবৈধ ও অমানবিক এবং যে বিপর্যয় তারা সৃষ্টি করেছে, তা অনেক ব্যাপক ও গভীর।’

হাইকোর্টে যখন এই মামলার বিচার চলছিল সে সময় দ্য মেইলের আইনজীবীরা প্রথমে দাবি করেন, মেগান আগে থেকেই জানতেন যে তিনি চিঠি লিখলে তা প্রকাশ্যে আসার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে এবং তাতে তিনি ব্যাপকভাবে প্রচার পাবেন। চিঠি লেখার সময় তার মাথায় এই চিন্তা কাজ করছিল।

কিন্তু মেগান দৃঢ়ভাবে এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেন। তারপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা বলেন, মেগানের বাবা থমাস মার্কেল এই চিঠির প্রকাশ্যে আনার সঙ্গে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত; কিন্তু সেই দাবির পক্ষেও প্রয়োজনীয় সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করতে ব্যর্থ হন তারা।

চলতি বছরের শুরুতে সেই মামলার রায় ঘোষণা করেন আদালত। রায়ে দ্য মেইলকে দোষীসাব্যস্ত করা হয় এবং পত্রিকার সামনের পৃষ্ঠায় নিজেদের ভুল স্বীকার ও মেগানের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করে প্রতিবেদন ছাপার নির্দেশ দেওয়া হয়। পাশাপাশি ব্রিটেনের এই রাজবধুর ব্যক্তিগত সম্মানহানির জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদানের আদেশও দেন আদালত।

বৃহস্পতিবারের ঘোষণাতে সেই পূর্বের আদেশই বহাল রেখেছেন ব্রিটেনের উচ্চ আদালত।

এসএমডব্লিউ