মধ্য আফ্রিকার দেশ ক্যামেরুনে উত্তরাঞ্চলে নদীর পানির দখলকে কেন্দ্র করে কৃষক ও পশুপালকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২২ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৩০ জনেরও বেশি। সংঘাত থেকে বাঁচতে ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে পার্শ্ববর্তী দেশ শাদে আশ্রয় নিয়েছেন।  

ক্যামেরুন ও শাদের সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

ক্যামেরুনের যে এলাকায় সংঘাত চলছে, সেখানে কয়েকটি জাতিগোষ্ঠীর মানুষের বসবাস রয়েছে। এসবের মধ্যে আরব শোয়া, মাউসগুম ও মাসা- এই তিনটি হলো বৃহত্তম তিন জাতিগোষ্ঠী।

আরবশোয়া জাতিগোষ্ঠীভুক্তদের পেশা পশুপালন এবং মাউসগুম ও মাসা জাতিগোষ্ঠী পুরুষানুক্রমে কৃষিজীবী।

সংঘাতপূর্ণ উত্তরাঞ্চলের এক আদিবাসী নেতা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, চলতি সপ্তাহের শুরুতে সময়ে স্থানীয় নদীর পানির দখলকে কেন্দ্র করে আরব শোয়ার পশুপালকদের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়ে মাউসগুম ও মাসা জাতিগোষ্ঠীর কৃষকরা।

 ওই নেতা রয়টার্সকে বলেন, ‘আরব শোয়া পশুপালকরা তাদের পশুদের পানি পান করাতে নদীর তীরে নিয়ে এসেছিল। মাউসগুম ও মাসা কৃষকরা তা দেখতে পেয়ে তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। সেই থেকেই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।

তিনি আরও জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় চলতি বছর ক্যামেরুনে বৃষ্টি হয়েছে কম। ফলে উত্তরাঞ্চলের বেশিরভাগ জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় তীব্র হয়ে উঠেছে পানির সংকট।

চলতি বছর আগস্টে একই কারণে সংঘাতে জাড়িয়েছিল আরব শোয়া পশুপালক ও মাউসগুম মৎসজীবীরা। সেবারও প্রায় ৩০ জনের মতো মানুষ মারা গিয়েছিলেন এবং শাদে আশ্রয় নিয়েছিলেন কয়েক হাজার মানুষ।

আদিবাসী ও নেতা রয়টার্সকে বলেন, ‘এই সমস্যাটির দ্রুত সমাধান করা প্রয়োজন। কারণ, এখানে যখন দু’টি বা তিনটি গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়, খুব দ্রুত তা অন্যান্য গোষ্ঠীর মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে।’

এদিকে শাদের প্রেসিডেন্ট মোহামাত ইদরিস ডেবি বুধবার এক টু্ইটবার্তায় বলেন, বর্তমানে শাদে ক্যামেরুনের ৩০ হাজারেরও বেশি শরণার্থী বসবাস করছেন। তবে তাদের মধ্যে চলতি সপ্তাহে কতজন এসেছেন- তা স্পষ্ট করেননি তিনি।

এই শরণার্থীদের খাদ্য ও অন্যান্য মানবিক সহায়তা উপাদান সরবরাহ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।

এসএমডব্লিউ