ছবি: রয়টার্স

মহামারির দুই বছরে বিশ্বজুড়ে নার্সের সংখ্যা কমেছে। নার্সদের আন্তর্জাতিক জোট ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব নার্সেসের শীর্ষ নির্বাহী হওয়ার্ড ক্যাটন বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল ফর নার্সেসের সদর দফতর সুইজারল্যান্ডের রাজধানী জেনেভায়। বিশ্বের ১৩০ টি দেশের নার্সদের সংস্থা এই জোটের সদস্য।

ক্যাটন জানান, মহামারিতে হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলো পুরোদমে চালু থাকায় করোনা রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে গিয়ে বিশ্বজুড়ে মারা গেছেন বিপুলসংখ্যক নার্স; অনেকে পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। এছাড়া নিয়ম অনুযায়ী গত প্রায় দু’বছরে অবসরে যাওয়া নার্সের সংখ্যাও কম নয়।

এই তিন কারণে গত দুই বছরে নার্সের সংখ্যা যে হারে কমেছে, সেই তুলনায় নতুন চাকরিতে যুক্ত হওয়া নার্সের সংখ্যা কম।

রয়টার্সকে ক্যাটন বলেন, ‘আমরা এখন মহামারির তৃতীয় বছরের দ্বারপ্রান্তে আছি এবং এই অবস্থা যদি চলতে থাকে, সেক্ষেত্রে সামনের বছর থেকেই বিশ্বজুড়ে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা। সেই সঙ্গে বাড়বে করোনায় মৃত্যুহারও।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, মহামারিতে গত দুই বছরে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন অন্তত ১ লাখ ১৫ হাজার নার্স। ‘তবে আমাদের ধারণা প্রকৃত সংখ্যা এর দ্বিগুণেরও বেশি’- রয়টার্সকে বলেন ক্যাটন।

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে বিশ্বজুড়ে প্রয়োজনের তুলনায় ৬০ লাখ নার্সের স্বল্পতা রয়েছে। এছাড়া, বর্তমানে যারা এই পেশায় আছেন, তাদের মধ্যে প্রায় ৪৭ লাখ ৫০ হাজার নার্স সামনের কয়েক বছরে অবসরে যাবেন।’

সাধারণভাবে দরিদ্র দেশগুলোতে মোট জনসংখ্যার অনুপাতে যতসংখ্যক নার্স থাকেন, উন্নত দেশগুলোতে মোট জনসংখ্যার তুলনায় নার্সদের সংখ্যা তার দশগুণ বেশি; কিন্তু মহামারি শেষ হওয়ার কোনো লক্ষণ আপাতত দেখা না যাওয়ায় অদূর ভবিষ্যতে এ বিষয়ে বিশ্বজুড়ে ভারসাম্যহীনতা তৈরি হবে বলেও শঙ্কা জানিয়েছেন ক্যাটন।

‘আমরা ইতোমধ্যে দেখছি যে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, যুক্তরাজ্য, জার্মানিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে নার্সদের রিক্রুট করছে। এতে আপাতভাবে ধনী দেশগুলোর জনগণের চিকিৎসাসেবায় ঘাটতি না হলেও উন্নত ও উন্নয়শীল দেশগুলোর পরিস্থিতি আরও সংকটপূর্ণ হচ্ছে।’

‘এবং ইতোমধ্যেই এই ব্যাপারটি বিশ্বজুড়ে চিকিৎসা সেবায় ভারসাম্যহীনতা তৈরি করেছে।’

বিশ্বজুড়ে নার্সের সংখ্যা বাড়ানোর ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলো দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে তা গোটা চিকিৎসাব্যবস্থায় প্রভাব ফেলবে এবং এর ফলে মহামারি আরও দীর্ঘায়িত হবে বলেও সতর্কবার্তা দিয়েছেন ক্যাটন।

এসএমডব্লিউ