চায়ের দোকানে এমবিএ ডিগ্রিধারী তরুণের ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই
ভারতে করোনা মহামারি ও লকডাউনে কর্মসংস্থান-পুঁজি হারানোর পর চায়ের দোকান দিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করেছেন দেশটির উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের এমবিএ ডিগ্রিধারী তরুণ কমলেশ। ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়াকে এই তরুণ বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগানে উদ্বুদ্ধ হয়েই তিনি এই চায়ের দোকান দিয়েছেন।
কমলেশ বলেন, ‘আমি আপনাদের মাধ্যমে দেশের তরুণ সমাজকে এই বার্তা পৌছে দিতে চাই যে- কোনো কাজই ছোট নয়। বিশেষ করে যখন টিকে থাকার প্রশ্ন সামনে আসে।’
বিজ্ঞাপন
উত্তরপ্রদেশের বারণসি জেলার হরিশচন্দ্র পিজি কলেজ থেকে বিকম পাশের পর কলেজ অব লক্ষ্ণৌ থেকে এমবিএ ডিগ্রি নেন কমলেশ। এরপর হরিয়ানার একটি নেটওয়ার্কিং কোম্পানিতে ১০ লাখ রুপি বিনিয়োগ করে আইটি ব্যবসা শুরু করেন। কিন্তু করোনা মহামারি ও লকডাউনের কারণে কোম্পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভারতের কোটি কোটি শিক্ষিত এবং কর্মসংস্থান হারানো তরুণদের মতো অকূল পাথারে পড়েন নিঃস্ব এই তরুণ।
কমলেশ বলেন, ‘সেসময় আমার সামনে তিনটি পথ খোলা ছিল- হতাশায় বিপর্যস্ত হয়ে বসে থাকা, চাকরির বিজ্ঞাপনের পেছনে ছোটা এবং বিকল্প উপায় খুঁজে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। প্রধানমন্ত্রীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগান স্মরণ করে আমি তৃতীয় পথ বেছে নিয়েছি।’
বিজ্ঞাপন
৮ হাজার রুপি হাতে নিয়ে লক্ষ্ণৌয়ের সিভিল লাইনস স্ট্রিট এলাকায় প্রাথমিকভাবে এই চায়ের দোকান দেন কমলেশ। এখন নিজের তো বটেই, দোকানে ৬ কর্মচারীর খাওয়া-পরার সংস্থানও করছেন তিনি।
টাইমস অব ইন্ডিয়াকে হাসিমুখে তিনি জানান, তার দোকানের তৈরি চায়ের প্রশংসা করে বন্ধু-বান্ধবরা অনেকেই রসিকতা করে ইদানিং বলতে শুরু করেছেন- ব্যবসায় প্রশাসন নয়, কমলেশ আসলে এমবিএ ডিগ্রি নিয়েছেন তন্দুরি চা বানানোর বিদ্যায়।
উত্তরপ্রদেশের চান্দাউলি জেলার ডিগ্গি গ্রাম থেকে উঠে আসা কমলেশকে অনেক সংগ্রাম করে পড়াশোনা ও ডিগ্রি অর্জন করতে হয়েছে। চায়ের দোকানদারি করাই যদি তার স্থায়ী পেশা হয়ে দাঁড়ায় তাহলে ডিগ্রিগুলো কোন কাজে লাগবে- প্রশ্নের উত্তরে কমলেশ বলেন, ‘শিক্ষা কখনো বৃথা যায় না। আমি হয়তো অন্যান্য ডিগ্রিধারীদের মতো কোনও কোম্পানির নির্বাহী বা এ ধরনের পদে আসীন হতে পারিনি, কিন্তু এই দোকান পরিচালনার ক্ষেত্রে আমি বলব- আমার শিক্ষা এখানে কাজে এসেছে।’
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
এসএমডব্লিউ