ছবি: রয়টার্স

ইন্দোনেশিয়ার মোট জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশেরও বেশি মানুষের দেহে করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি সন্তোষজনক পর্যায়ে আছে। দেশটির সরকার পরিচালিত সাম্প্রতিক এক গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য।

বৃহস্পতিবার বার্তাসংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি অর্থায়নে ২০২১ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে এই গবেষণাটি পরিচালনা করেছে ইন্দোনেশিয়ার প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় দ্য ইউনিভার্সিটি অব ইন্দোনেশিয়া। ২২ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর নমুনা ও তথ্য বিশ্লেষণ করে এই ফলাফল পেয়েছেন দেশটির বিজ্ঞানীরা।

গবেষণার সঙ্গে যুক্ত একজন বিজ্ঞানী ও ইন্দোনেশীয় মহামারিবিদ পান্দু রিওনো রয়টার্সকে এসম্পর্কে বলেন, ‘২০২১ সালের আগস্টের পর থেকে এ পর্যন্ত, অর্থাৎ গত প্রায় ছয়মাসে দেশে দৈনিক করোনা সংক্রমণে কোনো উল্লম্ফন দেখা যায়নি। কী কারণে এটি সম্ভব হয়েছে- তা আমরা জানতে পারলাম সাম্প্রতিক এই গবেষণার মাধ্যমে।’

করোনাভাইরাসের অতি সংক্রামক ধরন ডেল্টার প্রাদুর্ভাবে গত ২০২১ সালের মাঝামাঝি সময়ে প্রায় ছারখার হয়ে গিয়েছিল ইন্দোনেশিয়া। জুলাই ও আগস্ট মাসে প্রতিদিন প্রতিদিন ৫০ হাজারেরও বেশি সংক্রমণ দেখেছে দেশটি।

তার তারপর থেকেই ধীরে ধীরে কমে আসতে শুরু করেছে দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ। গত প্রায় তিন চার মাস ধরে ইন্দোনেশিয়ায় প্রতিদিন করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হচ্ছেন মাত্র কয়েকশ’ মানুষ।

এমনকি, এই ভাইরাসটির নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণে গত প্রায় একমাস ধরে বিশ্বের দেশে দেশে যখন হু হু করে প্রতিদিনই বাড়ছে দৈনিক সংক্রমণ, সে সময়ও ইন্দোনেশিয়ায় অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে দৈনিক আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা।

সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ায় বর্তমানে ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী আছেন ২৫০ জনের কিছু বেশি, যাদের প্রায় সবাই বাইরের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা। স্থানীয় ইন্দোনেশীয়দের মধ্যে ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হাতে গোনা কয়েকজন মাত্র।

তবে অধিকাংশ মানুষের করোনা প্রতিরোধী অ্যান্টিবডি থাকার অর্থ এই নয় যে টিকা নেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই- উল্লেখ করে পান্দু রিওনো রয়টার্সকে বলেন, ‘দেশের অধিকাংশ মানুষের দেহে অ্যান্টিবডি রয়েছে- এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো খবর; কিন্তু সবসময় মনে রাখতে হবে- দেহে অ্যান্টিবডি থাকুক কিংবা না থাকুক, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি টিকা না নিচ্ছেন, ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি সুরক্ষিত নন।’

বিশ্বের অনেক দেশের তুলনায় ইন্দোনেশিয়ায় এখনও বেশ ধীর গতিতে চলছে জাতীয় টিকাদান কার্যক্রম। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত মাত্র ৪২ শতাংশ মানুষ করোনা টিকার দুই ডোজ সম্পূর্ণ করেছেন।

এসএমডব্লিউ