চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মিয়ানমারের সেনাপ্রধান

রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকারকে হটিয়ে সেনাবাহিনীর রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকে দেশটির ‘মন্ত্রিসভা ব্যাপক রদবদল’ বলে উল্লেখ করে সংবাদ পরিবেশন করেছে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ব সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া নিউজ।

সোমবার মিয়ানমারের রাষ্ট্রক্ষমতা দখল এবং দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ তার দলের বহুসদস্যকে গ্রেফতার ও বন্দি করার ঘটনায় অধিকাংশ বিশ্ব নেতা যেখানে দেশটির সেনাবাহিনীর প্রতি নিন্দা জানিয়েছেন, সেখানে এই ঘটনার পক্ষে বা বিপক্ষে এখনো সরাসরি কোনও মন্তব্য করেননি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।

তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নাম উল্লেখ না করে দেশটির বিবাদমান সবপক্ষকে নিজেদের মতপার্থক্য মিটিয়ে ফেলার আহ্বান জানানো হয়েছে। অন্যদিকে, সোমবারের অভ্যুত্থানের ঘটনাকে ‘মন্ত্রিসভার ব্যাপক রদবদল’ হিসেবে উল্লেখ করে সংবাদ পরিবেশন করেছে সিনহুয়া।   

সিনহুয়া নিউজের সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানকে দেশটির ‘অকার্যকর ক্ষমতা কাঠামোকে সমন্বয়ের প্রক্রিয়া’ হিসেবে উল্লেখ করেছে চীনের সরকারপন্থী পত্রিকা হিসেবে পরিচিত গ্লোবাল টাইমস।

গ্লোবাল টাইমস লিখেছে, ‘কিছু আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক ধারণা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প; যিনি নির্বাচনে তার পরাজয় মেনে নিতে অস্বীকার করেছেন এবং নিজের সমর্থকদের ক্যাপিটল হিলে হামলার পথে পরিচালিত করেছেন, সেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েই মিয়ানমার সেনাবাহিনী তাদের দেশে মন্ত্রিসভায় রদবদলের উদ্যোগ নিয়েছে।

অবশ্য বেইজিং সরকার দীর্ঘদিন ধরেই একটি প্রথা মেনে চলে; সেটি হলো- নিজেদের আভ্যন্তরীন ব্যাপারে যেমন অন্যদের মন্তব্য তারা পছন্দ করে না, তেমনি অন্য কোনো রাষ্ট্রের আভ্যন্তরীন ব্যাপারেও সচরাচর মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকে। উপরন্তু দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক সবচেয়ে ঘনিষ্ট।

সোমবার বেইজিংয়ে প্রাত্যহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন মিয়ানমার পরিস্থিতি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘মিয়ানমারে কী ঘটছে তাতে আমরা নজর রাখছি। পরিস্থিতি সম্পর্কে আরও বোঝাপড়া তৈরির চেষ্টা করছি আমরা।’

তিনি বলেন, ‘মিয়ানমারের বন্ধুপ্রতীম প্রতিবেশী চীন। আমরা আশা করছি, মিয়ানমারের উভয়পক্ষ আইন ও সংবিধানের অধীনে নিজেদের মতপার্থক্য দূর করে রাজনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় মনযোগী হবে।’

গত জানুয়ারিতে মিয়ানমার সফরে গিয়েছিলেন চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিং। তখন মিয়ানমারে ক্ষমতাসীন সু চি সরকারকে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছিলেন তিনি।

সূত্র: এনডিটিভি।

এসএমডব্লিউ