ফের পরীক্ষামূলকভাবে হাইপারসনিক মিসাইল পরীক্ষার কথা জানিয়েছে পূর্ব এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দেশ উত্তর কোরিয়া। দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন ক্ষেপণাস্ত্রের সর্বশেষ এই পরীক্ষা দেখেছেন বলেও জানিয়েছে পিয়ংইয়ং। বুধবার (১২ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও আলজাজিরা।

এর আগে গত ৫ জানুয়ারি বছরের প্রথম ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা হিসেবে পারমাণবিক শক্তিধর এই দেশটি নিজের পূর্ব উপকূলে হাইপারসনিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছিল। এর এক সপ্তাহের মধ্যেই দেশটি দ্বিতীয়বারের মতো শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার কথা জানালো।

উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ) জানিয়েছে, মঙ্গলবার নিক্ষেপ করা হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় এক হাজার কিলোমিটার (৬২১ মাইল) দূরের একটি লক্ষ্যবস্তুতে ‘সফলভাবে আঘাত’ হেনেছে।

বিবিসি বলছে, সর্বশেষ এই পরীক্ষাসহ এনিয়ে তৃতীয়বারের মতো হাইপারসনিক মিসাইলের পরীক্ষা চালালো কোরীয় উপদ্বীপের এই দেশটি। এর মধ্যে এক সপ্তাহের ব্যবধানেই দু’বার শব্দের চেয়ে দ্রুতগতি সম্পন্ন এই ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালালেন কিম।

অবশ্য নতুন বছরের শুরুতেই দেওয়া ভাষণে পিয়ংইয়ংয়ের প্রতিরক্ষা শক্তি আরও জোরদারের ঘোষণা দিয়েছিলেন কিম জং উন। আর সেই অনুযায়ী একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।

বস্তুত মঙ্গলবার উত্তর কোরিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়টি পার্শ্ববর্তী জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়া শনাক্ত করেছিল। তবে তাৎক্ষণিকভাবে পিয়ংইয়ংয়ের নিক্ষিপ্ত এই ক্ষেপণাস্ত্রটি ব্যালিস্টিক মিসাইল হতে পারে বলে ধারণা করেছিল দেশ দু’টি। এছাড়া পরীক্ষার পরপরই এটিকে খুব নিন্দনীয় বলে উল্লেখও করেছিলেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।

রাশিয়া, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো পরাশক্তি দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই হাইপারসনিক অস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়ে আসছে। এসব দেশের বেশ কয়েকটি পরীক্ষা সফলও হয়েছে। কিন্তু উত্তর কোরিয়ার মতো অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত দেশ কীভাবে একের পর এক এমন পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে বহু প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। যদিও একের পর এক পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার জন্য উত্তর কোরিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ একাধিক দেশ।

সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, গত বছরের অক্টোবর মাসের শুরুতে বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালায় উত্তর কোরিয়া। এর আগে শব্দের চেয়ে দ্রুতগতিসম্পন্ন হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রথম পরীক্ষা চালায় দেশটি। এছাড়া গত সেপ্টেম্বর মাসে পৃথকভাবে ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোরও অভিযোগ ওঠে পিয়ংইয়ংয়ের বিরুদ্ধে।

উল্লেখ্য, হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র শব্দের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি গতিতে ছুটতে পারে। হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপনের পর খুব দ্রুত উপরে উঠে আবার দ্রুত নেমে আসে। এরপর আনুভূমিকভাবে বায়ুমন্ডলের মধ্যেই চলতে থাকে এবং চলমান অবস্থাতেও গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে, যা ব্যালিস্টিক মিসাইল থেকে ভিন্ন।

টিএম