যোগীর রাজ্যে আরেক বিজেপি বিধায়কের পদত্যাগ
ভারতের উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সরকারের মন্ত্রী ও বিধায়করা পদত্যাগ শুরু করেছেন। বিধানসভা ভোটের একমাসও বাকি নেই। উত্তরপ্রদেশ বিজেপিতে যা শুরু হয়েছে তাতে দিন নয়, ঘণ্টায় ঘণ্টায় দল ছাড়া শুরু করেছেন মন্ত্রী-বিধায়করা। এবার বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করলেন হাথরাসের বিধায়ক হরি শঙ্কর মাহৌর।
২০১৭ সালে বিপুল ভোটে তিনি এই কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। পাঁচ বছরের মাথায় পদত্যাগ করেছেন। বিধায়ক পদের সঙ্গে ছেড়েছেন দলের প্রাথমিক সদস্য পদও। এই নিয়ে শেষ ৫০ ঘণ্টায় মোট ১১ জন নেতা দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করলেন
বিজ্ঞাপন
আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি হাথরাস কেন্দ্রে নির্বাচন। তৃতীয় দফায় ভোট হবে হাথরাসে। হাথরাস জেলায় তিনটি বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। ২০১৭ সালের নির্বাচনে হাথরাস ও সিকান্দ্রৌ আসন দুটিতে বিপুল ভোটে জয়ী হন বিজেপি প্রার্থীরা। সদাবাদ কেন্দ্রটি যায় বিএসপির ঝুলিতে। তবে এই পাঁচ বছরে প্রবল সরকার বিরোধী হাওয়া তৈরি হয়েছে উত্তরপ্রদেশে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, গতবারের জেতা আসন বিজেপির পক্ষে ধরে রাখা মুশকিল হবে। তার ওপর ২০২০ সালে হাথরাসের এক কলেজ ছাত্রীকে গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা গোটা দেশে শোরগোল ফেলে দেয়। প্রশ্নের মুখে পড়ে পুলিশের ভূমিকা। বিরোধীরা প্রচারে বারবার হাথরাসের ঘটনাকে তুলে ধরে বিজেপিকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে। ফলে চাপে রয়েছে বিজেপিও।
বিজ্ঞাপন
বাকি দলত্যাগীদের মতো হরি শঙ্করও তার পদত্যাগপত্রে সমাজের প্রান্তিক শ্রেণির প্রতি সরকারের চূড়ান্ত অবহেলার অভিযোগ তুলেছেন। পদত্যাগপত্রে তিনি জানিয়েছেন, দলিত, কৃষক ও বেকারদের উন্নতিতে সরকার কোনো পদক্ষেপই করেনি।
গত সপ্তাহেই জাতীয় নির্বাচন কমিশন উত্তরপ্রদেশসহ পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করে। এরপর মঙ্গলবার থেকেই যোগীরাজ্যে শুরু হয় পদত্যাগের পালা। শ্রমমন্ত্রী স্বামী প্রসাদ মৌর্য্যের হাত ধরে এর সূচনা হয়। বৃহস্পতিবার দল থেকে ইস্তফা দেন আয়ুশমন্ত্রী ধর্মসিং সাইনি ও দারা সিং চৌহান। এছাড়া বিজেপি বিধায়ক অবতার সিং ভাদানাও বিজেপি ছেড়ে রাষ্ট্রীয় লোক দলে যোগদান করার কথা জানান। স্বামী প্রসাদ মৌর্য্যকে সমর্থন দেখিয়ে আরও তিন বিধায়কও দল ছেড়েছেন, তারাও সমাজবাদী পার্টিতেই যোগদান করতে পারেন। বিনয় শাক্য, মুকেশ ভর্মা ও বালা অবস্তিও বিজেপি ছেড়েছেন। আজ সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দিতে পারেন একাধিক বিধায়ক।
নির্বাচনের আগে বিজেপি থেকে পদত্যাগ করা তিন মন্ত্রীই জনজাতি/উপজাতি সম্প্রদায়ের। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সরকার তাদের উপেক্ষা করছে।
ধর্মসিং সাইনি বলেন, আমি দেড় বছর আগেই ঠিক করে নিয়েছিলাম যে ইস্তফা দেব। যখন ১৪০ জন বিধায়ক সরকারের বিরুদ্ধেই ধর্ণা দিয়েছিল খারাপ ব্যবহারের জন্য, সেই সময়ই স্থির করেছিলাম। কিন্তু তখন তাদের কণ্ঠকে অবদমিত করে দেওয়া হয়। তখনই সবাই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে এর জবাব দেওয়া হবেই। আমরা কেবল সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছিলাম। সেই কারণেই প্রতিদিন একজন করে মন্ত্রী ইস্তফা দিচ্ছেন। ২০ তারিখ অবধি এটাই চলবে।
ওএফ