স্পেনের ক্যানারি দ্বীপে পৌঁছানোর চেষ্টার সময় জীর্ণশীর্ণ একাধিক নৌকা থেকে ৩০০ জনের বেশি অভিবাসীকে উদ্ধার করেছে স্পেনের সমুদ্র উদ্ধার সেবা বিভাগ। দ্বীপে পারাপারের চেষ্টার সময় অন্তত আরও ১৮ জন অভিবাসী মারা গেছেন। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৯ জন একটি ডুবন্ত প্রায় নৌকায় কোনও রকমে ভেসে ছিলেন।

দেশটির উদ্ধারকারী কর্মকর্তারা বলেছেন, তারা এখন পর্যন্ত কারও ডুবে যাওয়ার তথ্য পাননি। আন্তর্জাতিক একটি মানবাধিকার সংস্থা প্রথমে স্পেনের নিরাপত্তা বাহিনীকে অভিবাসীদের ওই নৌকার খোঁজ দিয়েছিল।

অভিবাসন পর্যবেক্ষণ সংস্থা ওয়াকিং বর্ডারসের প্রতিষ্ঠাতা হেলেনা মালেনো বলেছেন, আফ্রিকা থেকে ল্যানজারোট দ্বীপে পারাপারের চেষ্টার সময় অন্তত ১৮ জন মারা গেছেন। তবে প্রাণহানির এই সংখ্যা বার্তাসংস্থা রয়টার্স নিরপেক্ষভাবে যাচাই করতে পারেনি বলে জানিয়েছে।

টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় স্পেনের উদ্ধার সেবা বিভাগ বলছে, অন্তত ছয়টি নৌকা থেকে ৩১৯ জন অভিবাসীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি নৌকাতেই ছিলেন ১২০ জনের মতো। অভিবাসীদের উদ্ধারের পর ল্যানজারোট দ্বীপ এবং গ্রান ক্যানারিয়া দ্বীপে নেওয়া হয়েছে।

রয়টার্সের ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, মঙ্গলবার ভোরের দিকে লাল কম্বলে মোড়ানো কয়েক ডজন অভিবাসী একটি উদ্ধারকারী নৌকায় করে আর্গুইনগুইন বন্দরে পৌঁছেছেন। এ সময় প্রতিরক্ষামূলক পোশাক এবং মুখোশ পরিহিত জরুরি কর্মীরা অভিবাসীদের বন্দরে পৌঁছাতে সাহায্য করেন।

উদ্ধারের পর গর্ভবতী এক নারী ও এক শিশুসহ মোট ১০ জনকে স্থানীয় একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয়। তবে তাদের কেউই ঝুঁকিতে নেই।

সাম্প্রতিক সময়ে স্পেনে পৌঁছানোর চেষ্টাকারী অভিবাসীদের প্রাথমিকভাবে মূল গন্তব্য হয়ে উঠছে পশ্চিম আফ্রিকা উপকূলের বিভিন্ন দ্বীপ। তাদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যক অভিবাসী ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে স্পেনের মূল ভূখণ্ডে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

গত বছর প্রায় ২২ হাজার ৩১৬ জন অভিবাসী অবৈধ পথে স্পেনের ক্যানারি দ্বীপে পৌঁছান। যদিও তার আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ২৩ হাজার ২৭১। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকের মধ্যে এ ধরনের সমুদ্রপথ পাড়ি দেওয়ার হিসাবে ২০২১ সাল ছিল অন্যতম ব্যস্ত পথ।

ওয়াকিং বর্ডারস বলছে, অন্তত ২০৫ শিশুসহ গত বছর ৪ হাজার ৪০০ জনের বেশি অভিবাসী স্পেনে পৌঁছানোর চেষ্টার সময় সমুদ্রে হারিয়ে গেছেন; যা ২০২০ সালের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস