ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার (২ ফেব্রুয়ারি) পূর্ব ইউরোপে প্রায় ৩ হাজার অতিরিক্ত সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

অবশ্য রাশিয়ার আক্রমণের হুমকিতে থাকলেও এসব সেনা ইউক্রেনে পাঠানো হবে না। মূলত পূর্ব ইউরোপের অন্য দুই দেশ পোল্যান্ড এবং রোমানিয়ায় এই ৩ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হবে। বৃহস্পতিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি ইউরোপে মার্কিন সেনা পাঠানোর কথা বুধবার সাংবাদিকদের কাছে জানান। তিনি বলেন, রুশ আগ্রাসন মোকাবিলা ও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদার করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অবশ্য এটি কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নয় বলেও জানান তিনি।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্দেশনা অনুযায়ী মার্কিন অঙ্গরাজ্য নর্থ ক্যারোলিনার ফোর্ট ব্র্যাগ থেকে প্রায় ২ হাজার সেনাকে পোল্যান্ড ও জার্মানিতে পাঠানো হবে। অন্যদিকে, ইতোমধ্যেই জার্মানিতে অবস্থান করা এক হাজার সৈন্যকে রোমানিয়ায় পাঠানো হবে।

ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে।

যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো। এছাড়া ইউরোপে মার্কিন সেনা মোতায়েনের এই সিদ্ধান্তকে ‘ধ্বংসাত্মক’ বলেও আখায়িত করেছে রাশিয়া।

অবশ্য ইউক্রেনের পশ্চিমা মিত্ররা বরাবরই বলে আসছে যে, পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে হামলা হলে তারা রাশিয়ার অর্থনীতিকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করবে। এছাড়া ইউক্রেনে হামলা হলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর নিষেজ্ঞা আরেপের হুঁশিয়ারি বরাবরই দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য।

এছাড়া সম্ভাব্য যেকোনো সংকট মোকাবিলায় সাড়ে ৮ হাজার মার্কিন সেনাকে ইউরোপে মোতায়েন করার জন্য উচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখেছে বাইডেন প্রশাসন। স্বল্প সময়ের নোটিশে এসব সেনাকে সংঘাতপূর্ণ এলাকায় মোতায়েনের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে আগেই জানিয়েছিল মার্কিন প্রতিরক্ষা দফতর।

উল্লেখ্য, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের অঙ্গরাজ্য ও রাশিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্র ইউক্রেন কয়েক বছর আগে ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আবেদন করার পর থেকেই উত্তেজনা শুরু হয়েছে। সম্প্রতি ন্যাটো ইউক্রেনকে সদস্যপদ না দিলেও ‘সহযোগী দেশ’ হিসেবে মনোনীত করায় আরও বেড়েছে এই উত্তেজনা।

টিএম