ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনা মোতায়েন নিয়ে মস্কোর সঙ্গে পশ্চিমা দেশগুলোর ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যেই ইউরোপে অতিরিক্ত সেনা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মূলত ইউক্রেন সংকটের মধ্যে সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সহায়তার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে রাশিয়া।

দেশটির দাবি, পূর্ব ইউরোপে মার্কিন সেনাসংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত ধ্বংসাত্মক। মস্কোর অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের ফলে উত্তেজনা বাড়বে এবং রাজনৈতিক-কূটনৈতিক উপায়ে সংকট সমাধানের সম্ভাবনা হ্রাস করবে। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

ইউক্রেন সীমান্তে প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বুধবার পূর্ব ইউরোপে প্রায় ৩ হাজার অতিরিক্ত সেনা পাঠানোর ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

অবশ্য রাশিয়ার আক্রমণের হুমকিতে থাকলেও এসব সেনা ইউক্রেনে পাঠাবে না ওয়াশিংটন। মূলত পূর্ব ইউরোপের অন্য দুই দেশ পোল্যান্ড এবং রোমানিয়ায় এই ৩ হাজার মার্কিন সেনা মোতায়েন করা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর পেন্টাগনের মুখপাত্র জন কিরবি বলেন, রুশ আগ্রাসন মোকাবিলা ও যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা জোরদার করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অবশ্য এটি কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নয়।

সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের নির্দেশনা অনুযায়ী মার্কিন অঙ্গরাজ্য নর্থ ক্যারোলিনার ফোর্ট ব্র্যাগ থেকে প্রায় ২ হাজার সেনাকে পোল্যান্ড ও জার্মানিতে পাঠানো হবে। অন্যদিকে, ইতোমধ্যেই জার্মানিতে অবস্থান করা এক হাজার সৈন্যকে রোমানিয়ায় পাঠানো হবে।

ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।

এদিকে ‘মস্কোর হাতে ইউক্রেনের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কায়’ চলতি সপ্তাহে ইউরোপে মার্কিন সেনা পাঠানোর ব্যাপারে রাশিয়ার উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেক্সান্ডার গ্রোশকো বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের এই সিদ্ধান্ত ধ্বংসাত্মক এবং অন্যায় পদক্ষেপ।

তিনি আরও বলেন, কোনো ধরনের বাধা বা শাস্তি ছাড়াই ইউক্রেন মিনস্ক চুক্তির লঙ্ঘন করে চলেছে এবং বাইডেনের এই সিদ্ধান্তে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ আরও উৎফুল্ল হবে।

টিএম