রুশ হামলার আশঙ্কায় গত ডিসেম্বরে মহড়ায় অংশ নেয় ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সংরক্ষিত সেনারা (ফাইল ছবি)

ইউক্রেন উত্তেজনার পারদ যেন কেবলই ওপরের দিকে উঠছে। রাশিয়া যেকোনো মুহূর্তে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে হামলা করতে পারে বলে আগেই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এবার সরব হলো ফ্রান্সও। দেশটি বলছে, সীমান্তে সকল সরঞ্জাম মোতায়েন সম্পন্ন হয়েছে এবং ইউক্রেনে বড় ধরনের হামলা চালানোর জন্য মস্কো প্রস্তুত।

সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ ইভেস লে ড্রিয়ান এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

ইউক্রেন সীমান্তে দীর্ঘদিন ধরেই প্রায় এক লাখ সেনাসদস্য মোতায়েন করে রেখেছে প্রতিবেশী দেশ রাশিয়া। এর মধ্যে ট্যাংক ও কামানসহ যুদ্ধবিমানের বহরও ইউক্রেন সীমান্তে পাঠিয়েছে দেশটি। যেকোনো মুহূর্তে রুশ সেনারা দেশটিতে আক্রমণ করতে পারে বলেও আশঙ্কা রয়েছে। যদিও ইউক্রেনে হামলার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে বরাবরই দাবি করে আসছে মস্কো।

তবে যুক্তরাষ্ট্র বলছে, যেকোনো মুহূর্তে ইউক্রেনে হামলা করে বসতে পারে রাশিয়া। একই আশঙ্কা প্রকাশ করছে ওয়াশিংটনের অন্যান্য মিত্র দেশগুলোও। এমনকি বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) এই হামলা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। যদিও নির্দিষ্ট কোনো তারিখের কথা নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ ইভেস লে ড্রিয়ান আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন, রাশিয়া সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে এবং সীমান্তে হাজার হাজার সৈন্য মোতায়েন করার পরে যেকোনোও মুহূর্তে দেশটি ইউক্রেনের ওপর বড় ধরনের আক্রমণ করতে পারে।

সোমবার ফ্রান্স ৫ নামক একটি টেলিভিশন চ্যানেলে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে হামলা চালানোর মতো সীমান্তে রুশ বাহিনীর সকল সরঞ্জাম আছে? (এর উত্তর) হ্যা, সেখানে সকল সরঞ্জাম ও উপাদানই আছে। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ইউক্রেনে হামলা করা সম্ভব।’

এদিকে রাশিয়ার আগ্রসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাশে থাকার বার্তা আগেই দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জার্মানির মতো দেশগুলো। ফ্রান্সও এই ইস্যুতে ইউক্রেনের পক্ষেই রয়েছে। অন্যদিকে ইউক্রেন ইস্যুতে কাছাকাছি আসতে শুরু করেছে রাশিয়া ও চীন।

এর আগে আলোচনার মাধ্যমে ইউক্রেন সংকটের সমাধান করতে রাশিয়া সফর করেছিলেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। সফরে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও বৈঠক করেছিলেন। কিন্তু সংকট ও উত্তেজনা প্রশমনের জন্য ফরাসি প্রেসিডেন্টের সেই চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি।

গত রোববার এক প্রতিবেদনে রয়টার্স জানায়, রাশিয়া আগামী বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) ইউক্রেনে হামলা করার পরিকল্পনা করছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইঙ্গিত দিয়েছে। তবে জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, বুধবারই ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার বিষয়ে যে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তারা নিশ্চিত নন।

এই পরিস্থিতিতে সোমবার ইউক্রেন সফরে যান জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। রাশিয়ার সম্ভাব্য আগ্রাসনের মুখে ইউক্রেনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ এবং ইউরোপে সম্ভাব্য একটি যুদ্ধ এড়াতেই পূর্ব ইউরোপের এই দেশটিতে যান তিনি।

এছাড়া ইউক্রেন সফর শেষ করে মঙ্গলবার রাশিয়া সফর করার কথা রয়েছে ওলাফ শলৎসের। সেখানে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করার কথাও রয়েছে জার্মান চ্যান্সেলরের।

টিএম