বাংলাদেশ থেকে দিনকে দিন বিদেশে পড়তে যাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা বাড়ছে। এরমধ্যে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীরাই ভিসা ইন্টারভিউ নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। অথচ এই ইন্টারভিউয়ের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা নেওয়া হয়। সঙ্গত কারণেই এটি বিদেশে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাহলে চলুন জেনে নিই, কিভাবে ভিসা ইন্টারভিউর জন্য নিজেকে প্রস্তুত করবেন-

প্রাথমিক ভাবে, যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার জন্য আবেদন করছেন; প্রতিষ্ঠানটি সম্পর্কে ভালোভাবে জানা শোনা থাকতে হবে। এটি আবেদনের ক্ষেত্রে সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। কেননা বেশিরভাগ ভিসা ভাইভা পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি অন্য বিশ্ববিদ্যালয় না পড়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে চাইছেন? কখনও কখনও বিষয় নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। ফলে এই সম্পর্কে খুঁটিনাটি জানতে হবে।

বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঠিকানা, শিক্ষার্থীদের জন্য বিদ্যমান সুযোগ সুবিধা, কিউএস ওয়ার্ল্ড র‌্যাঙ্ক, সাম্প্রতিক সময়ের অর্জন ও চলমান কোর্স সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। এসব জানতে খুব বেশি কষ্ট করারও প্রয়োজন নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েব সাইট থেকেই এসব তথ্য জানা সম্ভব।

প্রশ্ন: এতো দেশ থাকতে এই দেশেই কেন পড়তে চান?

-এ ক্ষেত্রে আপনি কাঙ্ক্ষিত দেশের পরিবেশ সম্পর্কে বলতে পারেন। তাছাড়া এখানকার শিক্ষা ব্যবস্থা অন্যান্য দেশের তুলনায় যেসব কারণে সেরা, সেগুলোও উল্লেখ করতে পারেন।

প্রশ্ন : এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন পড়তে চান?

-এ প্রশ্নের উত্তরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার ধরন, কোর্স কারিকুলাম সম্পর্কে বলতে পারেন।

প্রশ্ন: কেন এই কোর্সটি পড়তে চাইছেন?

-এ ক্ষেত্রে যদি কোর্স সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত কোন কোর্স ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়ে থাকে, সেগুলো বলতে হবে। এছাড়া এই কোর্স আপনার ক্যারিয়ারে জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ও স্পষ্ট বক্তব্য দিতে হবে।

প্রশ্ন: আপনি এই কোর্সটিকে কিভাবে মূল্যায়ন করছেন এবং কত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করতে চান?

-এই প্রশ্নের উত্তর আপনার কনর্ফামেশন অব অ্যাকসেপটেন্স লেটারে লিখা থাকবে। লেটারটি ভালোভাবে পড়লে একটা ধারণা পাবেন। সে অনুসারে উত্তর দিতে পারেন।

প্রশ্ন: আপনি যে কোর্সটি করতে চাচ্ছেন, সেটি কোন লেভেলের?

-বলে রাখা ভালো, ইউকেতে মাস্টার ডিগ্রিকে লেভেল সেভেন ধরা হয়। এ ক্ষেত্রে আপনাকে সংশ্লিষ্ট দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েব সাইট থেকে কোর্সের লেভেল সম্পর্কে ধারণা নিতে হবে।

প্রশ্ন: কোর্সটি সম্পন্ন করার পর আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?

-ইতিমধ্যে আপনি যদি কোন কোম্পানিতে চাকরিরত অবস্থায় থাকেন; তাহলে বলতে পারেন, কোর্সটি সম্পন্ন হলে আপনার কর্মস্থলে দ্রুত প্রমোশন পাওয়া যাবে। কিন্তু চাকরি না করলে বলতে পারেন- কোর্স সম্পন্ন হলে আপনি ভবিষ্যতে আরও পড়াশোনা করতে চান।

প্রশ্ন: কোর্স সম্পন্ন করে আপনার দেশের কল্যাণে কীভাবে ভূমিকা রাখতে চান?

-এ প্রশ্নের উত্তরে বিষয় সংশ্লিষ্ট খাতে নিজ দেশে কাজ করার পরিকল্পনা তুলে ধরতে পারেন। এ ক্ষেত্রে আগে ভাগে প্রস্তুতি নেওয়াই ভালো।

প্রশ্ন: টিউশন ফি প্রদান করবেন কীভাবে?

-এই প্রশ্ন সবচেয়ে বেশি করা হয়। এ ক্ষেত্রে আপনার র্স্পন্সশিপ সম্পর্কে বলতে হবে। যদি স্পন্সর আপনার বাবা মা হোন, সেটিও উল্লেখ করতে হবে। টিউশন ফি’য়ের টাকা যে আপনার অ্যাকাউন্টে রয়েছে, তাও প্রশ্নকারীকে বুঝাতে হবে। সে ক্ষেত্র প্রশ্নকর্তা বাবা মায়ের পেশা সম্পর্কেও জানতে চান। তাদের এ বিষয়েও স্পষ্ট ধারণা দিতে হবে।

প্রশ্ন: ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট হিসেবে আপনার দায়িত্ব কর্তব্য কেমন হতে পারে?

- একজন ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট হিসেবে নিজস্ব কমিউনিটির বাইরের শিক্ষার্থীর প্রতি সম্মান দেখানো দায়িত্বের মধ্যে পরে। তাছাড়া বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতির ওপর ইতিবাচক মনোভাব থাকতে হবে- এসব বিষয় বলতে হবে।

তবে একটি বিষয় মনে রাখা ভালো, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রে কোন ভুলত্রুটি থাকলে ইন্টারভিউ ভালো দেওয়ার পরেও অনেকে বিদেশে পড়তে যেতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই, অবশ্যই এবং অবশ্যই আপনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নির্ভুলভাবে পূরণ করতে হবে।