বিচারকাজে গতি বাড়াতে নিম্ন আদালতের বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, ডিজিটাল যুগে বিশ্বব্যাপী কাজ করার গতি বহুগুণ বেড়ে গেছে। বাংলাদেশের বিচারকদেরকেও এটা  বিবেচনায় নিয়ে বিচারকাজের গতি বাড়াতে হবে। বিচারকরা দ্রুত বিচারকার্য কীভাবে সম্পন্ন করবেন, সেটা নিয়ে তাদের ভাবতে হবে।

বুধবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে সহকারী জজ ও সমপর্যায়ের বিচারকদের জন্য আয়োজিত ৪৬ ও ৪৭তম বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

বিচারকদের উদ্দেশ্যে আইনমন্ত্রী বলেন, যুগ কিন্তু পাল্টে গেছে। আপনারা এখন ডিজিটাল যুগের বিচারক। আগে বিচারকার্যে দেরি হলে, বিভিন্ন কারণ উপলব্ধি করে জনগণ নিজেকে বুঝ দিত। কিন্তু এই ডিজিটাল যুগে তারা কিন্তু বিচারের বিলম্ব ভালভাবে দেখবে না। জনগণ দ্রুত ন্যায়বিচার চায়। 

তিনি বলেন, একটি কথা চালু আছে, জাস্টিস ডিলেইড ইজ জাস্টিস ডিনাইড এবং জাস্টিস হারিড ইজ জাস্টিস বারিড। আপনাদেরকে এই দুটোর মধ্যে কিন্তু সমন্বয় করতে হবে। একটি ব্যালান্সের মধ্যে আসতে হবে।

মন্ত্রী আরো বলেন, সবসময় একটি অভিযোগ আসে বিচারকার্য করতে গেলে মেডিকেল অফিসার ও তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষী দিতে দেরি হয়। কারণ তাদেরকে খুঁজে বের করতে, চিহ্নিত করতে এবং কর্মস্থল থেকে বিচারিক আদালতে আনতে অনেকদিন সময় লেগে যায়। এ সমস্যা দূর করার অংশ হিসেবে মামলার চার্জশিটে মেডিকেল অফিসার ও তদন্ত কর্মকর্তার মোবাইল নাম্বার যুক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে করে তাদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করে আদালতে আনা যাবে। এখন আমরা আরও একধাপ এগিয়ে যাচ্ছি। সেটা হচ্ছে এসএমএস-এর মাধ্যমে মেডিকেল অফিসার ও তদন্ত কর্মকর্তসহ প্রত্যেক সাক্ষীকে মামলার তারিখ জানানো। এর ফলে তারা আর বলতে পারবে না যে, আমরা সংবাদ পাইনি বা আমি এজন্য আদালতে আসতে পারিনি। 

আইনমন্ত্রী বলেন, আমরা কিন্তু এসব কাজ করে যাচ্ছি। এখন বিচারকদের যেটা নিশ্চয়তা দিতে হবে, সেটা হলো যেদিন মেডিকেল অফিসার বা তদন্ত কর্মকর্তা বা অন্য কোনো সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসবেন সেদিন যেন তার সাক্ষীটা হয়। এই জিনিসটা বিচারকদের নিশ্চিত করতে হবে।

আনিসুল হক বলেন, নিজেদের অর্থায়নে আমরা পদ্মা সেতু করেছি। এটা হচ্ছে আমাদের মর্যাদার ব্যাপার। এই সেতুর কল্যাণে এখন ঢাকা থেকে চার ঘণ্টায় বরগুনায় যাওয়া যাচ্ছে। যেটা আগে লাগত কমপক্ষে ১০-১২ ঘণ্টা। আমাদেরও কিন্তু বিচার করতে গেলে এই গতিটা মেইনটেইট করতে হবে। তা না হলে ৩৯ লাখ মামলাজট কমিয়ে আনতে পারব না।

তিনি জানান, জুডিশিয়াল অফিসার আরও বাড়ানো হবে। বিচারকের সংখ্যা গিয়ে তিন হাজারে ঠেকতে হবে। জুডিশিয়াল অফিসাররা যাতে গাড়ি কেনার জন্য স্বল্পসুদে সরকারি ঋণ পান সে ব্যবস্থা তিনি করবেন বলেও বিচারকদের আশস্ত করেন।

বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানার সভাপতিত্বে আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন।

এমএইচডি/জেডএস