দীর্ঘদিন পার হলেও আলোচিত সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে গণধর্ষণের মামলায় নিম্ন আদালতে এখনও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু না হওয়ায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।

আসামি বরিউল হাসান ওরফে ইসলামের জামিন শুনানিকালে বুধবার (২৭ জুলাই) বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ উষ্মা প্রকাশ করেন।

শুনানির শুরুতে আসামির আইনজীবী অ্যাডভোকেট আলী আহমেদ খোকন জামিন প্রার্থনা করে আদালতে বলেন, ধর্ষণের সঙ্গে আসামি বরিউলের সংশ্লিষ্টতা নেই। ঘটনার সময় তিনি ছিলেন না। পরে তিনি ঘটনাস্থলে এসেছেন। প্রায় দুই বছর ধরে বরিউল কারাগারে রয়েছেন।

এ সময় বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজল বলেন, এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ তো শুরু হয়ে গেছে। 

তখন আইনজীবী আলী আহমেদ খোকন বলেন, মাই লর্ড প্রায় দুই বছর হয়ে গেলেও এখনও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়নি।  

এসময় বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, এমন চাঞ্চল্যকর মামলায় এখনও সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু না হওয়া দুঃখজনক। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, জেলা জজ সাহেবরা কী এসব মামলা নিষ্পত্তি করতে আগ্রহী নয়? এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু না হওয়ায় বিচারকদের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।

পরে আদালত আসামি রবিউল হাসানের জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে জামিনের বিরোধিতা করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমী।

২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন এক তরুণী। এসময় ক্যাম্পাস থেকে কয়েকজন ছাত্র ওই তরুণীকে স্বামীসহ কলেজ ছাত্রাবাসে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা স্বামীকে বেঁধে মারধর ও গৃহবধূকে ধর্ষণ করা হয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তাদের উদ্ধার করে। 

ভুক্তভোগী গৃহবধূর স্বামী সেদিন (২৫ সেপ্টেম্বর) রাতে বাদী হয়ে শাহপরাণ থানায় মামলা করেন। মামলায় এজাহারনামীয় আসামি করা হয়েছে ৬ জনকে। সেই সঙ্গে অজ্ঞাতনামা আরও ২/৩ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হলো− এম সাইফুর রহমান, শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তারেক আহমদ, অর্জুন লঙ্কর, রবিউল ইসলাম ও মাহফুজুর রহমান। এরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আসামিদের মধ্যে তারেক ও রবিউল বহিরাগত, বাকিরা এমসি কলেজের ছাত্র। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সব আসামিকে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এমএইচডি/এসএম