পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের ঋণখেলাপিদের উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেছেন, ‘আগে টাকা দেবেন তারপর আলোচনা, না দিলে কারাগারে যেতে হবে।’

বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। আদালত বলেন, ‘এটা চোর-বাটপারদের টাকা না, এটা জনগণের টাকা। আপনারা তো টাকা নিয়েছেন। আর যারা এ প্রতিষ্ঠানে টাকা জমা রেখেছিলেন, তারা তো না খেয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন।’

এসময় আদালত একজন ঋণখেলাপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, টাকা না দিয়ে কোনো মন্ত্রী বা কারো প্রভাবে কাজ হবে না। আইনের মধ্যে থেকেই টাকা দিতে হবে। প্রথম ইনস্টলমেন্ট (কিস্তি) দিয়ে তারপর বাকি আলোচনা করে নেবেন বোর্ড বা কমিটির সঙ্গে।

পিপলস লিজিং থেকে ঋণগ্রহণ করা সর্বনিম্ন ৫ লাখ টাকা থেকে সর্বোচ্চ পর্যন্ত ২৮০ জনকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। তলবে এর আগে ২৩ ফেব্রুয়ারি ৫১ জন হাজির হয়েছিলেন। আজ দ্বিতীয় দফায় ৪৫ জন ঋণখেলাপি হাজির হন। গত দুই দিনে যারা আসেননি তাদের আগামী ৯ মার্চ আবারও হাজির হতে বলেছেন আদালত। এ বিষয়ে হাইকোর্ট বলেছেন, আদালতের তলবে যারা আজকে আসেননি,তাদের আরেকবার সুযোগ দেওয়া হবে। এরপরও তারা আদালতে হাজির না হলে প্রয়োজনে গ্রেপ্তার করে কোর্টে হাজির করা হবে।
 
গত ২১ জানুয়ারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড থেকে পাঁচ লাখ টাকা ও তার বেশি অর্থঋণ নিয়ে খেলাপি হওয়া এমন ২৮০ ব্যক্তিকে তলব করেন হাইকোর্ট। ২৩ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি তাদের পর্যায়ক্রমে আদালতে হাজির ঋণ ও ঋণ পরিশোধের বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে বলা হয়।

ওইদিন অবসায়ন প্রক্রিয়ার মধ্যে থাকা পিপলস লিজিংয়ের সাময়িক অবসায়ক (প্রবেশনাল লিকুইডেটর) আসাদুজ্জামান খানের পক্ষে আদালতে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মেজবাহুর রহমান। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী কাজী এরশাদুল আলম।

গত বছরের নভেম্বর মাসে কোম্পানি আদালত পিপলস লিজিংয়ের ঋণগ্রহীতাদের তালিকা দাখিল করতে বলেন বলে জানান আইনজীবী মেজবাহুর রহমান। তিনি বলেন, এ অনুসারে ঋণগ্রহীতা ৫০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তালিকা গত বছরের ২৩ নভেম্বর আদালতে দাখিল করা হয়। ওই ঋণগ্রহীতাদের তালিকা থেকে পাঁচ লাখ টাকা ও তার বেশি অর্থঋণ নিয়ে খেলাপি হওয়া ২৮০ জনকে কারণ দর্শাতে বলেছেন আদালতে। এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানাতে ২৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

গত বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ঋণসহ ২৮০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে পিপলস লিজিংয়ের পাওনা ১ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকার বেশি বলে জানান মেজবাহুর রহমান।

তিনি বলেন, এ ঋণ ও ঋণ পরিশোধ বিষয়ে নিজ নিজ অবস্থান ব্যাখ্যা করতে ২৮০ ব্যক্তিকে ২৩ ও ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির হতে বলা হয়।

এমএইচডি/এসএম