পটুয়াখালীর জলিল দুয়ারী দুই বছর আগে মেয়েকে হত্যার অভিযোগে জামাইয়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। অথচ সেই শ্বশুরই দুই বছর পরে জামাতার জামিনের পক্ষে সাফাই গাইতে আসলেন হাইকোর্টে। ভুল তথ্য দাখিল করার দায়ে মামলার বাদী মেয়ের বাবার বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ২১১ ধারা অনুযায়ী আদেশে পটুয়াখালী থানার ওসিকে মামলা করতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২২ ডিসেম্বর) বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পটুয়াখালীর টাউন বহাল গাউছিয়া গ্রামের বড় গাজী বাড়ির সাথী আক্তারকে হত্যা করে তার স্বামী কাউসার গাজী। এ ঘটনায় সাথী আক্তারের বাবা জলিল দুয়ারী পটুয়াখালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর নিহত সাথী আক্তারের মেয়ে ৫ বছরের ফারিয়া আফরোজ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বলে, তার বাবা ও দাদা মাথায় আঘাত করে আম্মুকে (সাথী আক্তার) হত্যা করে। পরে দড়ি দিয়ে সাথী আক্তারের লাশ ঝুলিয়ে রাখে।

তাছাড়া মেডিক্যাল রিপোর্টেও সাথী আক্তারকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে উল্লেখ করা হয়।

কিন্তু সম্প্রতি মেয়ের জামাই কাউসার গাজীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়ার আবেদন জানিয়ে এফিডেভিট করেন শ্বশুর জলিল দুয়ারী। আদালতে তিনি বলেন, কুচক্রী মহলের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তিনি এই মামলা করেছিলেন। প্রকৃতপক্ষে তার মেয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

আজ মঙ্গলবার জামিন আবেদনের শুনানির সময় মিথ্যা তথ্য দাখিলের বিষয়টি আদালতের নজরে আসে। তখন আদালত মিথ্যা তথ্য দেওয়ায় মামলার বাদী মৃত সাথী আক্তারের বাবার বিরুদ্ধে মামলার রুজু করার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে মেয়ের জামাই কাউসার গাজীকে জামিন দেন।

আদালত বলেন, ইদানিং প্রায়ই লক্ষ্য করছি বিভিন্ন রকম মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাদীরা আসামিদের জামিন করানোর চেষ্টা করছেন। এ ধরনের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেজন্য আমরা মামলার বাদী জলিল দুয়ারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশ দিচ্ছি।

আদালতে আসামিরপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আসাদ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।

এমএইচডি/টিএম