ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। লালবাগ থানাকে মামলা তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসী ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মোস্তফা রেজা নুরের আদালতে মামলার আবেদন করেন। আদালত সেটি আমলে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- নুঝাত ফারিয়া রোকসানা, মিম ইসলাম, নূর জাহান, ঋতু আক্তার, আনিকা তাবাসসুম স্বর্ণা ও কামরুন নাহার জ্যোতি।

জান্নাতুল ফেরদৌসী আট জনের নাম উল্লেখসহ ২০/২৫ জন অজ্ঞাতপরিচয় আসামির বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করেন। এরপর আদালত তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। শুনানি শেষে আদালত মামলার অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে রাজধানীর লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে আগামী ২৩ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার নেতৃত্বে অন্যান্য আসামিরা ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি, সিট বাণিজ্য, অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছিল। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী জান্নাতুল, মামলার সাক্ষী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা আসামিদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে। এতে আসামিরা ভুক্তভোগী জান্নাতুলের ওপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয়ে হন। পরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে আসামি রিভা ও রাজিয়ার নির্দেশে আসামি আনিকাসহ অজ্ঞাতপরিচয় ৩/৪ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার কক্ষে প্রবেশ করেন। তাকে না পেয়ে তার আসবাবপত্র ভাঙচুর করেন। তারা ওই কক্ষ থেকে নগদ ২০ হাজার টাকা ও একটি ল্যাপটপ চুরি করে নিয়ে যায়। ভুক্তভোগী রুমে আসার পথে তাকে আসামিরা ঘিরে ফেলেন। তাকে বিভিন্ন ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে আসামিরা ভুক্তভোগী জান্নাতুলকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মেরে জখম করেন।

গত ২২ সেপ্টেম্বর ইডেন মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন রীভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানার বিরুদ্ধে ‘সিট বাণিজ্য ও চাঁদাবাজির’ অভিযোগ এনে গণমাধ্যমে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সহ-সভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌস। এ কারণে তাকে ছাত্রীনিবাসের একটি কক্ষে আটকে রেখে মারধর করার অভিযোগ ওঠে।

এ ঘটনায় মধ্যরাতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের একাংশের বিক্ষোভে ইডেন কলেজ ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা রীভা ও রাজিয়ার বহিষ্কারের দাবি জানান। পরে রোববার দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সুপারিশসহ প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ আসে কেন্দ্রীয় কমিটি থেকে।

তদন্ত কমিটির প্রতি অনাস্থা প্রকাশ করে গত রোববার দুপুরে বিরোধী পক্ষ সংবাদ সম্মেলন করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন। পরে বিকেলে সভাপতি রিভা সংবাদ সম্মেলন করতে এলে আবারও সংঘর্ষে জড়ায় দুইপক্ষ। এতে অন্তত ১০ জন আহত হন।

এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ ছাত্রলীগের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

এমএইচডি/জেডএস