১০ নভেম্বর গ্রেপ্তার করা হয় আমাতুল্লাহ বুশরাকে।

বুশরা কোনোভাবেই ফারদিন হত্যার সাথে জড়িত না, সে সম্পূর্ণ নির্দোষ। আমরা বারবার বলেও এ বিষয়টি কাউকে বিশ্বাস করাতে পারিনি। বিনা কারণে তাকে হত্যা মামলায় জেলে যেতে হলো। এখন পুলিশ তদন্ত করে বলছে ফারদিন আত্মহত্যা করেছে। 

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুরে এভাবেই কান্নাজড়িত কণ্ঠে কথাগুলো বলছিলেন আমাতুল্লাহ বুশরার বাবা মঞ্জুরুল ইসলাম। 

তিনি আরও বলেন, এটা সবার কাছে পরিষ্কার যে, এ ঘটনার সাথে বুশরা কোনোভাবেই জড়িত নয়। তার ভবিষ্যৎ নিয়ে আমরা চিন্তিত। হয়তো আর সে আগের মতো স্বাভাবিক হতে পারবে না। এ দায় কার?

আরও পড়ুন : হত্যা পরিকল্পিত, আত্মহত্যার নাটক সাজাচ্ছে পুলিশ

তিনি বলেন, আমরা বুশরার পক্ষে আদালতে জামিনের আবেদন করেছি। আগামী ৫ জানুয়ারি জামিনের শুনানি হবে, ওই দিনের অপেক্ষায় আছি। আশা করছি আমার মেয়ে বুশরা জামিন পাবে। আদালত এ মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেবে বলেই আমার প্রত্যাশা। 

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ (২৪) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় করা মামলায় গ্রেপ্তার আমাতুল্লাহ বুশরা আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করেছেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত এ বিষয় শুনানির জন্য আগামী ৫ জানুয়ানি দিন ধার্য করেছেন। ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো.আছাদুজ্জামানের আদালতে এ জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

বুশরার আইনজীবী এ.কে.এম হাবিবুর রহমানও বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, গত ৩০ নভেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে বুশরার জামিনের জন্য আবেদন করেছি। আদালত আবেদন গ্রহণ করে শুনানির জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন।

এর আগে, ফারদিনকে খুন করা হয়েছে দাবি করে রামপুরা থানায় দায়ের করা মামলায় ‘হত্যা করে লাশ গুম’ করার অভিযোগ আনেন ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন। সেই মামলায় এক নম্বর আসামি করা হয় বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে। ১০ নভেম্বর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৫ দিন রিমান্ডের পর এখন তিনি কারাগারে আছেন। 

আরও পড়ুন : ব্রিজ থেকে নদীতে লাফিয়ে পড়েন ফারদিন : র‍্যাব

৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে উদ্ধার করা হয় ফারদিন নূর পরশের মরদেহ। 

মামলার অভিযোগে ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা বলেন, ফারদিনকে রামপুরা এলাকায় বা অন্য কোথাও হত্যাকারীরা পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এ হত্যার পেছনের তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরার ইন্ধন রয়েছে।

৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানান, ‘তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে’।

মামলার তদন্তভার ডিবি পুলিশের ওপর ন্যস্ত করা হয়। এরপর মাদক সংশ্লিষ্টতা, মাদক ব্যবসায়ীদের হাতে খুন, কিশোর গ্যাংয়ের সংশ্লিষ্টতার বিষয় সামনে আসে। সর্বশেষ তদন্ত সংশ্লিষ্ট ডিবি পুলিশ ও র‌্যাব তদন্ত অগ্রগতি নিয়ে এক ধরনের ‘সমঝোতা’য় পৌঁছে জানায়, স্বেচ্ছায় মৃত্যুবরণ বা আত্মহত্যা করেছেন ফারদিন। ডিবি পুলিশ জানায়, ফারদিনের মৃত্যুর ঘটনায় জেলে থাকা বুশরা নির্দোষ।

এনআর/এনএফ