নিউ মার্কেটে সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে নিয়ে ফেসবুকে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মো. রাকিবুর রহমান ফাহিমের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। 

সোমবার (২ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরীর আদালত এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিন ফাহিমকে আদালতে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করেন সিটি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের পরিদর্শক এস এম শাহ জালাল। শুনানি শেষে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আরও পড়ুন : মেয়র তাপসকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর মামলার প্রতিবেদন ৪ জানুয়ারি

আদালতের শাহবাগ থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রোববার (১ জানুয়ারি) মো. রাকিবুর রহমান ফাহিমকে বংশালের নাজিরাবাজার থেকে গ্রেপ্তার করে সিটি সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।

মামলায় অভিযোগ আনা হয়, সামাজিক যোগাযোগ-মাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন আইডি ও পেজ থেকে কে বা কারা ডিএসসিসির মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের নামে আপত্তিকর ও মানহানিকর, মিথ্যা বক্তব্য সংবলিত ভিডিও ও কনটেন্ট প্রচার করে আসছে।

মো. রাকিবুর রহমান ফাহিম নামে একটি আইডি থেকে বাংলাদেশ টাইমস নামে একটি পেজে প্রকাশিত ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে। সঙ্গে লেখা হয়েছে, ‘গতকাল থেকে আজ পর্যন্ত লড়াই সংগ্রামের ঘটনা চলছে। আমরা মনে করি শেখ ফজলে নূর তাপস, উনার ইন্ধনে পুলিশ আমাদের ওপর এভাবে চড়াও হওয়ার সুযোগ পেয়েছে...।

আরও পড়ুন : নিউ মার্কেট ইস্যুতে মেয়র তাপসকে নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়ানোয় মামলা

তাজউদ্দিন আহমেদ রাসেল নামে একটি আইডি থেকে আইনিউজ.বিডি পেজের ভিডিও শেয়ার করে লেখা হয়েছে, ‘লন্ডনে গিয়ে মজা করছে তাপস সাহেব। আজ মেয়র তাপস সাহেবের নির্দেশেই রাস্তায় ছাত্র, সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীসহ শতশত মানুষের রক্ত ঝরছে...।’  ইলিয়াস হোসাইন মিডিয়া নামে একটি ফেসবুক পেজ থেকে ভিডিও সম্প্রচার করে বলা হয়, ‘ব্যবসায়ীদের মিষ্টি খায় তাপস...।’

এর আগে ২৮ এপ্রিল অজ্ঞাত ফেসবুক ব্যবহারকারীদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে শাহবাগ থানায় মামলা করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের ব্যক্তিগত সহকারী মনিরুল ইসলাম। মামলায় দুজনের নাম ও তিনটি পেজের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।

১৮ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্মচারীদের সংঘর্ষ হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চলে এ সংঘর্ষ। এরপর রাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলেও ১৯ এপ্রিল সকাল ১০টার পর থেকে ফের দফায় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ, যা চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক আহত হন। সংঘর্ষে দুজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাদের একজন ডেলিভারিম্যান, অন্যজন দোকান কর্মচারী।

সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। একটি মামলা বিস্ফোরক আইনে এবং অন্যটি পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে। দুই মামলায় নিউমার্কেটের ব্যবসায়ী, কর্মচারী ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীসহ মোট ১২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এছাড়া সংঘর্ষে নিহত নাহিদের বাবা মো. নাদিম হোসেন ও মুরসালিনের ভাই নুর মোহাম্মদ বাদী হয়ে নিউমার্কেট থানায় দুটি হত্যা মামলা করেছেন। এ চার মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১ হাজার ৪০০ জনকে।

এনআর/এসকেডি