চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দুই কিশোরীকে হত্যার দায়ে আবুল হোসেন (৩১) নামে এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করা হয়েছে। মামলায় ওমর হায়াত মানিক (৩০) নামে এক আসামিকে খালাস দেওয়া হয়। এছাড়া মামলাটির তদন্তে ত্রুটি এবং গাফিলতির জন্য তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

বুধবার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আলীম উল্লাহ এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত এবং খালাসপ্রাপ্ত আসামি দুজনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আবুল হোসেনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

আবুল হোসেনের গ্রামের বাড়ি সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড চৌধুরী পাড়া এলাকায়। তার বাবার নাম মো. ইসমাইল।

আদালত সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের ১৮ মে সীতাকুণ্ড পৌরসভার জঙ্গল মহাদেবপুর ত্রিপুরা পাড়া এলাকার বাসিন্দা সকলতি ত্রিপুরা (১৭) ও তার প্রতিবেশী সবিরানী ত্রিপুরা (১৬) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের হয়।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, আসামিরা প্রায় সময় ভুক্তভোগী দুই কিশোরীকে উত্যক্ত এবং প্রেমের প্রস্তাব দিত। ঘটনার দিন ভুক্তভোগী দুই কিশোরীর বাবা-মা পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে কৃষি কাজে যান। পরবর্তীতে তাদের বাড়িতে ঢুকে আসামিরা দুজনকে হত্যার পর মরদেহ ঝুলিয়ে রেখে চলে যায়। পরবর্তীতে স্থানীয়রা দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে।

এ মামলার প্রধান আসামি আবুল হোসেন গ্রেপ্তার হয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এছাড়া মামলার অপর আসামি মো. রাজীব নামে এক আসামি দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়। এ ঘটনায় সীতাকুণ্ড থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুজায়েত হোসেন আসামি আবুল হোসেন ও ওমর হায়াত মানিকের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অশোক কুমার দাশ ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলাটির বিচারিক পর্যায়ে ১৯ জন সাক্ষী দেন। এছাড়া প্রধান আসামি আবুল হোসেন আদালতে ঘটনার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। তাকে মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঝুলিয়ে রেখে দণ্ড কার্যকর করার জন্য আদালত আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া আসামি মানিককে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

তিনি আরও বলেন, মামলায় আসামি আবুল হোসেন জবানবন্দিতে রাজীব এবং মানিকের নাম উল্লেখ করেন। তবে তদন্ত কর্মকর্তা খালাসপ্রাপ্ত মানিক জবানবন্দিতে উল্লেখ করা সে মানিক কি না নিশ্চিত করতে পারেননি। না হয় মানিককে শাস্তি দেওয়া যেত। এই ত্রুটি জন্য পুলিশের অতিরিক্ত আইজিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে আদেশ দিয়েছেন আদালত।

এমআর/এসকেডি