বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ‘ভুয়া’ জন্মদিন পালন ও মুক্তিযুদ্ধকে ‘কলঙ্কিত’ করার অভিযোগে মানহানির পৃথক দুই মামলায় অভিযোগ গঠন শুনানি পিছিয়ে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) ঢাকার অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান নূরের আদালত এ আদেশ দেন। 

আরও পড়ুন>>মানহানির দুই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি পেছাল

এদিন দুই মামলার অভিযোগ গঠন শুনানির জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকায় তার পক্ষে সময় আবেদন করেন আইনজীবী মাসুদ আহম্মেদ তালুকদার। আবেদন মঞ্জুর করে নতুন এদিন ধার্য করেন আদালত।

মুক্তিযুদ্ধকে ‘কলঙ্কিত’ করার অভিযোগে দায়ের করা মামলার বিবরণীতে বলা হয়, ২০০১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামায়াতের সঙ্গে জোট বেঁধে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন খালেদা জিয়া। তিনি রাজাকার-আলবদর নেতাদের মন্ত্রী-এমপি বানিয়ে তাদের বাড়ি-গাড়িতে স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র ও জাতীয় পতাকা তুলে দেন।

আরও পড়ুন>>খালেদা জিয়ার দুই মামলায় অভিযোগ গঠনের শুনানি ১৭ নভেম্বর

২০১৬ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির এ মামলা করেন জননেত্রী পরিষদের সভাপতি এবি সিদ্দিকী। ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে তেজগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জকে (ওসি) নির্দেশ দেন আদালত।

পরের বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন রাজধানীর তেজগাঁও থানার পুলিশ পরিদর্শক মশিউর রহমান (তদন্ত)। মামলার অন্য আসামি বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মৃত মর্মে তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন>>দুই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি ২৬ জানুয়ারি

অন্যদিকে ‘ভুয়া’ জন্মদিন পালনের অভিযোগে মামলায় বলা হয়, খালেদা জিয়ার একাধিক জন্মদিন নিয়ে ১৯৯৭ সালে দুটি জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, এসএসসি পরীক্ষার মার্কশিট অনুযায়ী সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর জন্ম তারিখ ১৯৪৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর।

১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে একটি দৈনিকে তার জীবনী নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জন্মদিন ১৯৪৫ সালের ১৯ আগস্ট লেখা হয়। আর বিয়ের কাবিননামায় জন্মদিন উল্লেখ করা হয় ১৯৪৪ সালের ৪ আগস্ট। সর্বশেষ ২০০১ সালে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট অনুযায়ী খালেদা জিয়ার জন্মদিন ১৯৪৬ সালের ৫ আগস্ট।

আরও পড়ুন>>আদালতের অনুমতি নিয়ে বিদেশ যেতে পারবেন খালেদা জিয়া

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, বিভিন্ন মাধ্যমে তার পাঁচটি জন্মদিন পাওয়া গেলেও কোথাও ১৫ আগস্ট জন্মদিনের তথ্য পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় তিনি পাঁচটি জন্মদিনের একটিও পালন না করে ১৯৯৬ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীর দিন অর্থাৎ জাতীয় শোক দিবসে (১৫ আগস্ট) আনন্দ-উৎসব করে কেক কেটে জন্মদিন পালন করে আসছেন।

‘ভুয়া’ জন্মদিন পালনের অভিযোগে ২০১৬ সালের ৩০ আগস্ট বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গাজী জহিরুল ইসলাম। ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই এ দুই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন মঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশ।

এনআর/কেএ