শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় পদক্ষেপ জানতে চান হাইকোর্ট
আদালতের আদেশ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষার কী কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে বলেছেন হাইকোর্ট। আগামী ৪ সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে বিবাদীদেরকে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেছেন আদালত।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, মুক্তিযোদ্ধা এবং সংস্কৃতি বিষয়ক সচিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর, দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র, চিফ ইঞ্জিনিয়ার, পূর্ত মন্ত্রণালয়, অর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টসহ সংশ্লিষ্টদের তা জানাতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
রোববার (১৪ মার্চ) বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ নির্দেশ দেন। মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য আগামী ২৫ এপ্রিল দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত। আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।
২০১০ সালের ২৫ আগস্ট হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মর্যাদা রক্ষায় হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) দায়ের করা রিট মামলায় বেশকিছু নির্দেশনাসহ আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
হাইকোর্টের নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে
১. এলাকায় পাহারার ব্যবস্থা গ্রহণ করা, যাতে ভবঘুরে ঘোরাফেরা করতে বা অসামাজিক কার্যকলাপ চলতে না পারে।
২. মূল বেদীতে কোনো মিটিং সমাবেশ থেকে বিরত রাখতে নির্দেশ প্রদান করা হল, বেদীর পাদদেশে মিটিং সভা করতে বাধা-নিষেধ থাকবে না।
৩. ভাষা আন্দোলনে শহীদদের মরণোত্তর পদক ও জীবিতদের জাতীয় পদক প্রদান করতে হবে।
৪. যেসব ভাষা সৈনিক জীবিত আছে তারা কেউ সরকারের কাছে কোনো আর্থিক সাহায্য চাইলে তা প্রদান করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
৫. বিশ্ববিদ্যালয় ও সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মাণ ও মর্যাদা রক্ষা করতে হবে।
৬. শহীদ মিনারের পাশে একটি লাইব্রেরিসহ যাদুঘর প্রতিষ্ঠা করা এবং সেখানে ভাষা আন্দোলন তথ্য সংক্রান্ত ব্রুসিয়ার রাখা, যাতে পর্যটকরা তথ্যাবলি জানতে পারে।
৭. ভাষা সৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির জন্য বিবাদীদেরকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা এবং ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে গেজেট প্রকাশ করার নির্দেশ দেওয়া হলো।
৮. ভাষা সৈনিকদের সব রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো এবং সাধ্যমত সরকারি সুযোগ নিশ্চিত করা।
তবে ওই রায় সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন না হওয়ায় গত ৪ মার্চ বিবাদীদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি) ।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, ওই রায়ের পর ১০ বছর অতিক্রান্ত হলেও বাস্তবায়নের জন্য একাধিকবার আদালতের শরণাপন্ন হতে হয়েছে। এমনকি কতিপয় নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলেও যাদুঘর প্রতিষ্ঠা, ভাষা সৈনিকদের প্রকৃত তালিকা তৈরির কাজ এখনও সমাপ্ত হয়নি।
এমএইডি/জেডএস