ঐক্যবদ্ধ আইনজীবী মোর্চা থেকে এস এন গোস্বামীর নাম প্রত্যাহার
বিএনপি ও সমমনা সব রাজনৈতিক দলের আইনজীবীদের নিয়ে গঠিত ইউনাইটেড ল'ইয়ার্স ফ্রন্ট থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী।
সোমবার (১২ জুন) বিকেলে অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। আমার সম্মতি না নিয়ে ইউনাইটেড ল'ইয়ার্স ফ্রন্টের আহ্বায়ক কমিটিতে নাম রাখা হয়েছে। আমি আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরীকে বলেছি, এ সংগঠনের কমিটিতে সদস্য হিসেবে থাকতে চাই না। আমার নাম প্রত্যাহার করতে বলেছি।
বিজ্ঞাপন
এর আগে আইনের শাসন, গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, লুণ্ঠিত ভোটাধিকার, সার্বজনীন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও আইনজীবীদের মর্যাদা রক্ষায় ইউনাইটেড ল'ইয়ার্স ফ্রন্ট নামে আইনজীবী মোর্চার আত্মপ্রকাশ হয়। বিএনপি ও সরকারবিরোধী সমমনা সব রাজনৈতিক দলের আইনজীবীদের নিয়ে এই মোর্চা গঠন করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই মোর্চার ঘোষণা দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীনকে এই ঐক্যবদ্ধ আইনজীবী মোর্চার আহ্বায়ক করা হয়েছে। সদস্য সচিব হয়েছেন গণফোরামের একাংশের নেতা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরীকে। এছাড়া সদস্য হিসেবে ৩৬ জন আইনজীবীকে রাখা হয়েছে। এই তালিকার ৩২ নম্বরে অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামীর নাম রাখা হয়েছিল। অ্যাডভোকেট এস এন গোস্বামী সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল মেডিয়েশন সোসাইটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ঐক্যবদ্ধ আইনজীবী মোর্চার তিন দফা লক্ষ্য তুলে ধরেন। সেগুলো হলো-
১. সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং নির্মোহভাবে আইনের শাসন, গণতন্ত্র, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, লুণ্ঠিত ভোটাধিকার, সার্বজনীন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, আইনজীবীদের মর্যাদা রক্ষা, পেশাগত সমস্যার সমাধানের চেষ্টা, বিচার অঙ্গনের দুর্নীতির মূলোৎপাটনসহ সারা দেশের আইনজীবী সমিতিগুলো যেন স্বাধীন ও নির্ভীকভাবে আইনজীবীদের সম্মান ও স্বার্থ সংরক্ষণ রক্ষা করতে পারে, সেজন্য দেশব্যাপী আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রাম ধারাবাহিকভাবে পরিচালিত করা হবে। ‘আইনজীবী সুরক্ষা আইন’ প্রণয়নে কাজ করা হবে।
২. বাংলাদেশের সব বারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যের মাধ্যমে সারা দেশের আইন অঙ্গনের পরিবেশ শান্ত রাখা। কোনো অবস্থাতেই যেন বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনুপ্রবেশ করতে না পারে ও দেশের সব বারে যাতে বহিরাগতদের প্রবেশ না হয় সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা।
৩. যেহেতু চলতি বছরের ১৫ ও ১৬ মার্চ সুপ্রিম কোর্ট বারে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি, তাই সাংবিধানিক সংকট পূরণের লক্ষ্যে গত ৩০ মার্চ বারের সদস্যদের সংবিধানের ১৭(৩)(এ) অনুযায়ী তলবি সাধারণ সভার মাধ্যমে একটি অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি ঘোষিত হয়। সেই সভায় সভাপতিত্ব করেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যারিস্টার এম. আমির-উল- ইসলাম। সংবিধান অনুযায়ী এই কমিটি হচ্ছে বারের কমিটি।
ঐক্যবদ্ধ আইনজীবী মোর্চা এই কমিটি অর্থাৎ সুপ্রিম কোর্ট বারের কমিটির সব ধরনের কার্যক্রমে প্রতিনিয়ত সমর্থন ও সহযোগিতা দেবে। এছাড়া প্রত্যেক বার সমিতিতে যেন আইনজীবীরা সুষ্ঠুভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেই লক্ষ্যে প্রত্যেক বারে ধারাবাহিক আন্দোলন গড়ে তুলবে।
এমএইচডি/জেডএস