মোদিবিরোধী বিক্ষোভের ঘটনায় ছাত্র অধিকার নেতার স্বীকারোক্তি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে ছাত্র অধিকার পরিষদের করা বিক্ষোভ মিছিলের ঘটনায় গ্রেফতার দলটির নেতা মাঝহারুল ইসলাম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
এদিন ছাত্র অধিকার পরিষদের আরও পাঁচ নেতাকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন একই আদালত। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখা থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, মতিঝিল থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিকুল ইসলাম আকন্দ আসামি বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক আল আমিন, শাকিল ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইব্রাহিম, ইলিয়াস, সাইফুলকে রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করেন। একইসঙ্গে তাদের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
বিজ্ঞাপন
এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। গত রোববার (২৮ মার্চ) আসামিদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের আগমনের প্রতিবাদে ২৫ মার্চ (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টায় বাংলাদেশ ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুরের (সাবেক ডাকসু ভিপি) নেতৃত্বে আসামিরা একটি বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিক্ষোভ মিছিলটি পল্টন মোড়, নাইটিংঙ্গেল মোড় ও ফকিরাপুল মোড় থেকে হয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বরের পশ্চিম পাশে অবস্থান নেয়। এরপর আসামিরা বেআইনিভাবে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সরকারবিরোধী উসকানিমূলক ও অবমাননাকর স্লোগান দিতে থাকেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, পাশাপাশি রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে যানচলাচল বন্ধ করে জনগণের চরম ভোগান্তি সৃষ্টি করেন। রাস্তায় যানচলাচল স্বাভাবিক রাখতে আসামিদের অনুরোধ করলে তারা পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত হন। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটিয়ে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি খাটো করার উদ্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন আসামিরা। অগ্নিসংযোগসহ রাস্তায় দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করে পুলিশের সরকারি কাজে বাধা দিয়ে হত্যার উদ্দেশে আক্রমণ করেন তারা।
এ ঘটনায় ২৫ মার্চ (বৃহস্পতিবার) গভীর রাতে মতিঝিল থানায় পুলিশের উপ-পরিদর্শক মিন্টু কুমার ৫১ জনকে আসামিকে করে মামলাটি দায়ের করেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফর ঘিরে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে গত বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ছাত্র ও যুব অধিকার পরিষদের একটি মিছিল রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাংকি এলাকায় শুরু হয়। এতে পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পুলিশের বাধা পেয়ে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে মতিঝিলের শাপলা চত্বরের দিকে যান। সেখানে পুলিশের সঙ্গে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে ৩৪ জনকে আটক করে পুলিশ
বিক্ষোভ মিছিল থেকে সৃষ্ট ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনায় সাত পুলিশ আহত হন। ছাত্র অধিকারের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মীও আহত হয়েছেন বলে সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
টিএইচ/জেডএস